শ্রম অধিকার সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শ্রমনীতি অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়লে বাংলাদেশ থেকে কোনো পণ্য না নেওয়া কিংবা অর্থ পরিশোধ না করার শর্ত যুক্ত করে তৈরি পোশাকের ঋণপত্র দিয়েছে একটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান।
বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, একটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান প্রথমবারের মতো ঋণপত্রের সাধারণ শর্তের মধ্যে বলেছে বাংলাদেশ কোনো নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়লে তারা পণ্য নেবে না। যদি পণ্য জাহাজীকরণের পরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো ঘটনা ঘটে, তাহলেও অর্থ দেবে না ক্রেতা প্রতিষ্ঠান। তবে শর্ত দেওয়া ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের নাম জানাননি তিনি।
ফারুক হাসান বলেন, নতুন শর্ত দেওয়ায় অনেক ব্যাংক মূল ঋণপত্রের বিপরীতে ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্র খুলতে নাও পারে। এতে তৈরি পোশাক রপ্তানির পর অর্থপ্রাপ্তির বিষয়টিতে কিছুটা অনিশ্চয়তা থেকে যায়। আবার ক্রেতা পণ্য না নিলে স্টক হয়ে যেতে পারে। ফারুক হাসান আরও বলেন, এ ঘটনায় উদ্যোক্তারা টেনশনে পড়বেন। তবে ব্যবসায় কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছি। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমনীতি বিশ্বের সব দেশের জন্যই প্রযোজ্য, সেহেতু অন্য দেশে ক্রয়াদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রেও একই ধরনের শর্ত হয়তো দিচ্ছে বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাষ্ট্র গত ১৬ নভেম্বর বিশ্বজুড়ে শ্রম অধিকার সুরক্ষায় নতুন নীতি ঘোষণা করে। এ নীতির বিষয়ে ২০ নভেম্বর ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে ‘শঙ্কা’ প্রকাশ করে বাণিজ্য সচিবকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, শ্রম অধিকারবিষয়ক নতুন এ নীতির লক্ষ্যবস্তু হতে পারে বাংলাদেশ। কারণ শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে এই নীতি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা রাষ্ট্রের ওপর আরোপের সুযোগ রয়েছে।
এদিকে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন, বিশ্ববাণিজ্যের দৃশ্যপট দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে; মানবাধিকার এবং পরিবেশগত ডিউ ডিলিজেন্স ক্রমবর্ধমানভাবে অগ্রাধিকার পাচ্ছে, অন্যদিকে ভূরাজনৈতিক বিষয়গুলোও বাণিজ্যকে প্রভাবিত করছে। যেহেতু বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাণিজ্যের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল, তাই বাণিজ্যনীতিসংক্রান্ত যে কোনো নতুন বিষয় আমাদের জন্য উদ্বেগের।