আধুনিক অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব গড়ে তোলার বিষয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য আজ মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় পঞ্চম কৌশলগত সংলাপ করবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শুরু হবে এ সংলাপ। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে দুই দেশের মধ্যে আধুনিক অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা অংশীদারত্ব গড়ে তোলার যে অঙ্গীকার আছে, সে লক্ষ্যে এই কৌশলগত সংলাপ হতে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, এবারের সংলাপে নিজ নিজ দেশের নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন এবং যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওলেথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কার্যালয়ের (এফসিডিও) স্থায়ী আন্ডার সেক্রেটারি ফিলিপ বার্টন। সংলাপে যোগ দিতে ব্রিটিশ আন্ডার সেক্রেটারি ফিলিপ বার্টন দুই দিনের সফরে গতকাল সোমবার ঢাকায় এসেছেন।
এই সংলাপে গুরুত্ব পাবে বন্দি বিনিময় ও পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি; ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ; প্রতিরক্ষা, উন্নয়ন সহায়তা, সুশাসন, মানবাধিকার, রোহিঙ্গা সঙ্কট, শান্তিরক্ষা; রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবসহ বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়। নির্বাচনের আগে সংলাপটি হচ্ছে। তাই, ধারণা করা হচ্ছে, সংলাপ অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন এবং মানবাধিকার নিয়েও কথা বলবে যুক্তরাজ্য।
প্রায় দুই বছর পর ঢাকা-লন্ডন কৌশলগত সংলাপ হচ্ছে। এর আগে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে লন্ডনে চতুর্থ অংশীদারত্ব সংলাপে হয়। ওই সংলাপে এক দেশে বসে অন্য দেশের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ঐক্যমত হয়েছিল। পাশাপাশি বন্দি বিনিময় ও পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়েও ঢাকা-লন্ডন একমত হয়।
২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক মামলায় দণ্ডিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রায় দেড় দশক ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। তাকে দেশে ফেরত পাঠাতে ব্রিটিশ সরকারকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছিল সরকার। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মঈনুদ্দীন পলাতক থাকায় তার দণ্ড কার্যকর করা যায়নি। তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন বলে ধারণা বাংলাদেশের।
এছাড়া, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিছু নাগরিক সেখানে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। বন্দি বিনিময় ও পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি সই হলে সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী এবং দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে জড়িত ব্যক্তিদের এনে বিচারের মুখোমুখি করা সম্ভব হবে।
এদিকে, রোববার ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কৌশলগত এ সংলাপে দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে আধুনিক অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা অংশীদারত্ব গড়ে তোলার অঙ্গীকারের প্রতিফলন হবে। এতে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও উন্নয়নমূলক অংশীদারিত্ব এবং রোহিঙ্গা সঙ্কটসহ অন্যান্য আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়ে আলোচনা হবে। সেই সঙ্গে এই সংলাপ দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং কপ-২৮ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সহায়তা বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করবে। সংলাপে যুক্তরাজ্যের শক্তিশালী অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিনিয়োগ প্রস্তাব তুলে ধরা হবে।