নোয়াখালী-১ সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটের শুনানি চলছিল। রিটের বিরোধিতা করে শুনানির জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ডায়াসের সামনে যাচ্ছিলেন। এ সময় রিটকারী বিএনপির ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন পেছন থেকে অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে বলেন, এটা নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়। বাধা দেবেন না। বাধা দিলে কিন্তু মার্কিন ভীসানীতির আওতায় পড়ে যাবেন।
জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল মুচকি হেসে বলেন, অসুবিধা নেই, নাম দিয়ে দেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত সবাই হেসে উঠেন।
গতকাল বুধবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানিতে এ হাস্যরসের সৃষ্টি হয়।
আদালতে রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ২০২১ সালের সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত যে আইন আছে এই আইনটাকে আমরা চ্যালেঞ্জ করিনি বা আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলিনি। এই আইনের অধীনে নির্বাচন কমিশন ১ জুন যে সীমানা নির্ধারণ করেছে এই নির্ধারণের প্রক্রিয়াকে আমরা চ্যালেঞ্জ করেছি। মূল আইনকে আমাদের রিটে চ্যালেঞ্জ করা হয়নি। এ বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করা সংবিধানে কোনো বাধা নেই।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ আইন সম্পর্কে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা বা চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। এটা সংবিধানের ১২৫(ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে।
তিনি বলেন, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত ২০২১ সালের যে আইন হয়েছে ওই আইনেও বলা হয়েছে, সীমানা নির্ধারণ নিয়ে কোনো আদালতে মামলা করা যাবে না বা প্রশ্ন তোলা যাবে না।
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, নোয়াখালী-১ আসনের যে সীমানা আছে সেখান থেকে একটি ইউনিয়নকে কর্তন করে নোয়াখালী-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটা করার সময় এলাকার ভোটার বা নাগরিকদের আপত্তি অগ্রাহ্য করা হয়েছিল।
ব্যারিস্টার খোকন অ্যাটর্নি জেনারেলের শুনানির বিরোধিতা করে বলেন, সাধারণত আদালত যখন একটা রুল ইস্যু করে, রুল ইস্যুর পরে বিবাদীরা রুল শুনানিতে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। যেহেতু এখনো এ বিষয়ে রুল ইস্যু হয়নি তাই অ্যাটর্নি জেনারেল এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে পারেন না বা আপত্তি জানাতে পারেন না।
তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, রুল ইস্যুর আগেই রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তারা যেকোনো বিষয়ে শুনানিতে অংশ নিতে পারেন। আপত্তি জানাতে পারেন। দীর্ঘদিন থেকে উচ্চ আদালতে এ প্র্যাকটিস রয়েছে।
আদালত বলেন, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ আইন কোনো আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না, সংবিধানের ১২৫(ক) অনুচ্ছেদে এ বিষয়ে বাধা রয়েছে। আমরা আপনার রিট আবেদনটি নট প্রেস রিজেক্ট করে দিচ্ছি। আপনি অন্য বেঞ্চে এটা নিয়ে যেতে পারেন।
তখন ব্যারিস্টার খোকন বলেন, আমরা রিটের স্বপক্ষে আরও শুনানি করতে চাই। আজ কোনো আদেশ দিবেন না। পরে আদালত শুনানি মুলতবি করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ উপস্থিত ছিলেন। আর ব্যারিস্টার খোকনের পক্ষে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এইচ এম সানজিদ সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।