নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব জাহাংগীর আলম বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেসব অতিথি, পর্যবেক্ষক, সাংবাদিক আসবেন তাদের জন্য বিমানবন্দরে এবং হোটেলে স্থাপন করা হবে হেল্প ডেস্ক। সেখান থেকে তারা খুব সহজেই তাদের বিষয়গুলো জেনে সার্বিক গাইড লাইন এবং পরবর্তী করণীয় বিষয়ে সাপোর্ট পাবেন।
বুধবার (২৮ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সেবা নিশ্চিতে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
অন্যান্যবারের নির্বাচনের তুলনায় সাড়া কি রকম পাচ্ছেন, সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন ইসি সচিবকে। তিনি বলেন, বিদেশি ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক ও প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসবেন। তাদের আসার পর থেকে দেশে ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত যে সমস্ত দপ্তর, মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত তাদের সঙ্গে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ছিল। এ সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচন কমিশনের যে বৈদেশিক পর্যবেক্ষক নীতিমালা আছে, তা অনুসরণ করে যারা নিজ খরচে পর্যবেক্ষণ করতে চান তাদের আগমন এবং ইসি থেকে যাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সেই আমন্ত্রিত মেহমানদের কীভাবে আমরা একটি নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিতে পারি, সেই বিষয়ে বিমান মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সকলকে নিয়ে বসেছিলাম। বলতে পারেন এটা একটা গতানুগতিক সভা। কেননা, প্রতিটি সংসদ নির্বাচনের আগে এই ধরণের সভা হয়। এতে করণীয় কি, আবাসন, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা এসব নিয়ে সভা হয়ে থাকে। তার আলোকেই আজকের সভাটি হয়েছে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, শুধু নিরাপত্তা না, যিনি নিজ খরচে আসবেন তিনি কোন হোটেলে উঠবেন- সেই নিরাপত্তা, তিনি কোন এলাকায় যাবেন সেই নিরাপত্তা এবং আমন্ত্রিত অতিথি যারা আসবেন তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সব মিলিয়ে কমপ্লিট সিদ্ধান্ত নিতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়েছে।
বিদেশি মেহমানদের জন্য বিমানবন্দরে আমরা একটা হেল্প ডেস্ক করি যেন সহজেই ইমিগ্রেশন ক্রস করে তার নির্ধারিত হোটেলে উঠতে পারেন। হোটেলে আমরা একটা হেল্প ডেস্ক করে থাকি, সেখান থেকে তারা যেন নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য সাংবাদিকরা নিতে পারেন। সভায় তারা কোন হোটেল থাকবে সেটা চূড়ান্ত হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। হঠাৎ অসুস্থ হলে স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি আলোচনা হয়েছে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব আরও বলেন, যারা নিজেরা আসবেন তারা ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। আর আমন্ত্রিতরা ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। তাই নিজ খরচে কতজন আসছে তা ৭ ডিসেম্বরের পর জানা যাবে।
আর আমন্ত্রিত অতিথিরা কতজন আসছেন তা ১৬ ডিসেম্বরের পর জানা যাবে। কত জন আসবেন, কোন ক্যাটাগরির আসবেন, সে অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেমন- কোনো রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলে এ রকম আর সচিব এলে আরেক রকম হবে, নির্বাচন কমিশনার হলে এরকম হবে নিরাপত্তা। কাজেই কারা আসবেন তা না জানা পর্যন্ত নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলতে পারবো না। তবে তাদের নিরাপত্তাসহ সকল ব্যবস্থা সুন্দরভাবে করা হবে।
তিনি বলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আবেদন পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঠাবো। তারা তাদের নীতিমালা অনুযায়ী তারা যাদের অনাপত্তি দেবেন তাদের অনুমোদন দেবেন কমিশন।
তারা কি যেকোনো জায়গায় যেতে পারবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মো. জাহাংগীর আলম বলেন, তাদের জন্য কোন পদ্ধতিতে কোথায় যাবেন, একটা গাইডলাইন থাকবে, সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার ৮৭ জন পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য আবেদন জানিয়েছে। আর ৩৪টি দেশ ও চারটি সংস্থার ১১৪ জনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসি।