তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে ভারতের কাছে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। পুরো ম্যাচে বাংলাদেশকে শুধু পার্থক্য বুঝিয়েছে সুরিয়াকুমার যাদবের দল। টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে বাংলাদেশ। এরপরের গল্পটা শুধু আসা-যাওয়ার। মাঝে কিছুটা হাল ধরার চেষ্টা করেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ১২৭ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা। লক্ষ্য তাড়ায় হার্দিক পান্ডিয়া, সুরিয়া এবং সাঞ্জু স্যামসনের ঝড়ে ৪৯ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত। ৭ উইকেটের বড় জয়ে ১-০ সিরিজে এগিয়ে গেল ভারত।
রোববার (৬ অক্টোবর) গোয়ালিয়রের শ্রীমন্ত মাধবরাও সিন্ধিয়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক সুরিয়াকুমার যাদব। আগে ব্যাট করতে নেমে আর্শদীপ সিংয়ের লেংথ ডেলিভারিতে প্রথম স্লিপ এবং থার্ডম্যানের মাঝ দিয়ে চার মেরে রানের খাতা খোলেন লিটন দাস। এরপরের বলেই বিদায় নেন এলকেডি। অর্শদীপের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের ডেলিভারি অন সাইডে বড় শটের চেষ্টায় হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন লিটন। উইকেটের কাছ থেকেই ক্যাচ নেন রিঙ্কু সিং। তাতে এক চারেই শেষ হয়ে থাকল লিটনের ইনিংস।
নিজের ফেরার ম্যাচে হার্দিক পান্ডিয়ার লেগ স্টাম্পে করা ডেলিভারিতে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মেরে ভালো শুরুর আভাসই দিয়েছিলেন ইমন। তবে বাঁহাতি ওপেনারকে টিকতে দিলেন না অর্শদীপ। বাঁহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট অব লেংথ ডেলিভারিতে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হতে হয়েছে ইমনকে। ৯ বলে ৮ রান করেছেন বছর দুয়েক পর ফেরার ম্যাচে।
এরপর তাওহিদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টা করছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে দলীয় ৪০ রানে ফের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১৮ বলে ১২ রান করে আউট হন হৃদয়। এরপর দ্রুতই আরও দুই উইকেট হারায় টাইগাররা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২ বলে ১ ও জাকের আলি ৬ বলে ৮ রান করে আউট হন।
মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন শান্ত। তবে দলীয় ৭৫ রানে ২৫ বলে ২৭ রান করে আউট হন তিনি। শান্তর বিদায়ের পর ক্রিজে এসে এক ছক্কা ও এক চারে ৫ বলে ১১ রান করে ফিরে যান রিশাদ হোসেন।
এরপর তাসকিন আহমেদ ও মিরাজের ব্যাটে একশো পেরোয় বাংলাদেশ। তবে দলীয় ১১৬ রানে ১৩ বলে ১২ রান করে আউট হন তাসকিন। শেষ ব্যাটার হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমান আউট হলে পর্যন্ত ১৯ ওভার ৫ বলে ১২৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ৩২ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন মিরাজ। ভারতের পক্ষে ভরুণ চক্রবর্তী ও আর্শদীপ সিং নেন ৩টি উইকেট।
জবাব দিতে নেমে শুরু থেকেই মারমুখি ব্যাটিং করে ভারত। দুই ওপেনার অভিষেক শর্মা এবং সাঞ্জু স্যামসন ২ ওভারেই তুলেন ২৬ রান। ৭ বলে ১৬ রান করে রান আউটের ফাঁদে পরে সাজঘরে ফিরেন অভিষেক শর্মা। এরপর স্যামসনের সাথে যোগ দেন অধিনায়ক সুরিয়াকুমার যাদব। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ১৪ বলে ২৯ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে বিদায় নেন ভারতীয় অধিনায়ক। ভারতের অধিনায়ককে ফিরিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান।
দলের ৮০ রানের মাথাতে বিদায় নিয়েছেন টিকে থাকা ওপেনার স্যামসন। ১৯ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেলা স্যামসনকে ফিরিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। স্যামসনের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেছেন হার্দিক পান্ডিয়া এবং নিতিশ কুমার রেডি। ভারতের মারকুটে ব্যাটারদেরকে কোনোভাবেই থামাতে পারছিলেন না টাইগার বোলাররা।
শেষমেশ সহজেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে ভারত। ৪৯ বল এবং ৭ উইকেট হাতে রেখে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টিম ইন্ডিয়া। ১৬ বলে ৩৯ রান করে অপরাজিত ছিলেন হার্দিক। রেডি অপরাজিত ছিলেন ১৫ বলে ১৬ রান করে। বাংলাদেশের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ এবং রিশাদ হোসেন। দারুণ দাপুটে এই জয়ের ফলে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত।