অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি রেনা বিটারের সঙ্গে ভিসানীতি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে শিক্ষার্থীরা যেন সহজে ভিসা পায়, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
রোববার (১ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকায় সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি রেনা বিটার ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনিন উইনের সঙ্গে বৈঠক করেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব খুরশেদ আলম।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, কন্স্যুলারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, ভিসানীতি নিয়ে কোনো আলাপ আলোচনা হয়নি। তারাও তোলেনি। তবে হ্যাঁ, আমাদের কিছু বিষয় ছিল যেমন, আমাদের ছাত্ররা ঠিক মতো ভিসা পায় না। আমাদের যারা ধরেন, আন্তর্জাতিক সংস্থায় চাকরি করেন, মানে যারা বাংলাদেশি অরিজিন, তাদের ভিসা পেতে সমস্যা হয়, সেই বিষয়গুলো তুলে ধরেছি। তারা বলেছে, তারা এ বিষয়ে কনসিডার করবে। তারা ভিসা ইস্যুর সময় কমিয়ে এনেছে, আগে যেটা অনেক বেশি ছিল, সেটা এখন ৬ মাসের মধ্যে এনেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে খুরশেদ আলম বলেন, তারা নিয়মিত ভিজিটের অংশ হিসেবে আসছে, বিশেষ কোনো কারণে আসেনি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, কন্স্যুলার নিরাপত্তার মধ্যে পড়ে না।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের (মার্কিন প্রতিনিধি) তো এ বিষয়ে একটি উদ্বেগ আছেই। তারা চায় রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায়, মর্যাদার সাথে নিরাপদে ফিরে যাক। এটা তো আমরাও চাই, এতে আমাদেরও কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু এমন পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয় যে, প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন, এতে আমরা বড় ধরনের কোনো ভুল করে ফেলেছি, এই ধরনের পরিস্থিতিতে যাওয়াটা ঠিক হবে না।
ভিসানীতি ঘোষণার পর অনেক শিক্ষার্থী বা সাধারণ মানুষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, বিষয়টি জানানো হয়েছে কি না জানতে চাইলে খুরশেদ আলম বলেন, হ্যাঁ, আমরা জানিয়েছি। তারা জানিয়েছে, কোভিডের পর তাদের কিছু সমস্যা ছিল, সেটা তারা কাটিয়ে উঠেছে। এখন তারা ৬ মাসের মধ্যেই ভিসা ইস্যুর চেষ্টা করবে।
ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কোনো উদ্বেগ জানিয়েছেন কি না, প্রশ্নের জবাবে খুরশেদ আলম বলেন, না। এ বিষয়ে উদ্বেগ জানানোর কিছু নেই। তারা যদি করতে চায় সেটা….।
নতুন ‘থ্রি সি’ ভিসা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। এ বিষয়ে আপনাদের উৎসাহ থাকতে পারে, আমাদের নেই।
এদিকে বৈঠকের বিষয়ে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার লক্ষ্যে স্টুডেন্ট ভিসার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি, আমেরিকান নাগরিকদের কনস্যুলার সহায়তা এবং ভিসা ইন্টারভিউয়ে অপেক্ষার সময় কমানোর বিষয়ে কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট রেনা বিটার ও ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলমের আলোচনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি রেনা বিটারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সফরে এসেছে।
প্রতিনিধিদলটি পাকিস্তান সফর শেষে ঢাকা সফরে এসেছে। সফরকালে তারা দূতাবাস এবং কনস্যুলেট কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং কনস্যুলার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশ সফরে কনস্যুলার সমস্যা নিয়ে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবে। সফরে বিদেশি মার্কিন নাগরিকদের সুরক্ষা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ ভ্রমণ ও অভিবাসনের সুবিধার্থে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর ও টেকসই প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দেওয়া হবে। সফর শেষে সোমবার ঢাকা ত্যাগ করবেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।