পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে উঠান বৈঠকে ইভিএম নিয়ে আওয়ামী লীগের এক নেতার বক্তব্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এর একটি ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে ওই নেতাকে বলতে শোনা যায়, ‘ভোট হবে ইভিএমে, কে কোথায় ভোট দেবে তা কিন্তু আমাদের কাছে চলে আসবে। অতএব ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নাই, টেনশনেরও কিছু নাই।’ আওয়ামী লীগ নেতার এমন বক্তব্য নিয়ে সব মহলে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। বিব্রত বোধ করছেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও। আর সাধারণ ভোটারদের মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের ওই নেতার নাম জোবায়দুল হক ওরফে রাসেল। তিনি পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। ইউপি নির্বাচন নিয়ে গতকাল শনিবার স্থানীয় তাঁতেরকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এলাকায় একটি উঠান বৈঠকে অংশ নেন জোবায়দুল। সেখানে ইভিএম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যটি করেন। এ সময় তাঁর পাশে বসা ছিলেন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইব্রাহিম ফারুক।
এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউপির ধানদী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে পুলিশ প্রশাসনের সামনে এক সভায় ভোটারদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন জোবায়দুল। ওই বৈঠকে তিনি বলেন, ‘যাঁরা নৌকায় ভোট দেবেন, তাঁরাই কেবল ভোটকেন্দ্রে যাবেন।’ সভাটিতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান ওরফে ভিপি মান্নান উপস্থিত ছিলেন।
ইভিএম নিয়ে জোবায়দুলের বক্তব্য মেনে নিতে পারছেন না স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, ‘যে বক্তব্য দিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চায়, সেই বক্তব্য যদি আওয়ামী লীগ নেতারা দেয়, তাতে সরকার তথা আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়। মুখে লাগাম দিয়ে কথা বলা প্রয়োজন।’
আবদুস ছালাম নামের সাবেক এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘এর আগে তিনি (জোবায়দুল) বলেছেন, “যাঁরা নৌকায় ভোট দেবেন, তাঁরাই কেবল ভোটকেন্দ্রে যাবেন।” এখন আবার ইভিএমে ভোট গ্রহণ নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক ও নেতিবাচক বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে তথ্যবিভ্রাটের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা হওয়া খুব জরুরি।’