জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গাকে দলীয় সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়াকে কেন্দ্র করে রংপুরে জাতীয় পার্টির (জাপা) রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে। অব্যাহতির পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির পর থেকে সরব হয়ে উঠেছেন নেতা-কর্মীরা। বিশেষ করে, দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের অনুসারীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত জি এম কাদেরের অনুসারীদের উপস্থিতিতে রংপুরের দলীয় কার্যালয় মুখর ছিল।
রওশন এরশাদ ইস্যুতে পক্ষ নেওয়ায় গত বুধবার বিকেলে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ দলের সব পদ-পদবি থেকে মসিউর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রংপুরে দলটির দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করে। বুধবার রাতে জি এম কাদেরের পক্ষে অবস্থান নিয়ে জেলা ও মহানগর কমিটি সভা করে। এর আড়াই ঘণ্টা পর মসিউরের পক্ষে অবস্থান নিয়ে অন্য একটি পক্ষ সড়কে বিক্ষোভ করে জি এম কাদেরের কুশপুত্তলিকা পোড়ায়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এদিকে গতকাল রাত ৯টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল শেষে আবার জি এম কাদেরের অনুসারীরা মসিউর রহমানের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।
গতকাল রাতে নগরের সেন্ট্রাল রোডের জাপা কার্যালয়ে জি এম কাদেরের পক্ষের সবস্তরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ছিল আনন্দ-উচ্ছ্বাস। সন্ধ্যার পর থেকে শত শত নেতা-কর্মী দলীয়ে কার্যালয়ে আসেন। মধ্যরাত পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের দলীয় কার্যালয়ে দেখা যায়।
দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, মহানগর জাপার সভাপতি ও সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, এত দিন মাঠপর্যায়ে নেতা-কর্মীরা নিরব ছিলেন, এই ঘটনার পর সবাই যেন সরব হয়ে উঠেছেন। দলীয় কার্যালয়ে ছুটে আসছেন। সংগঠনের খোঁজ নিচ্ছেন। দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের পক্ষে অবস্থান আরও জোরদার করতে সংঘবদ্ধ হয়েছেন। এতে দল নতুন করে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।
জাপার নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসিরও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘জি এম কাদেরই এখন জাপার প্রাণশক্তি। কোনো অবস্থাতেই আমরা পিছপা হব না। দলের এমন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নেতা-কর্মীরা নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন। ’
তবে বুধবার রাতের পর মসিউর রহমানের অনুসারীদের আর রংপুরের রাজপথে দেখা যায়নি। শহরের সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ও এখন অনেকটাই জি এম কাদেরের অনুসারী নেতা-কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে।
এদিকে সংসদ সদস্য মসিউর রহমানের নির্বাচনী এলাকা রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরাও নিবর রয়েছেন বলে জানা গেছে। সেখানে মসিউর রহমানের অনুসারী ও সমর্থকেরা কোনো কর্মসূচি পালন করেননি। গঙ্গাচড়া উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মমিনুল ইসলাম বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
মসিউর রহমানের পক্ষে অবস্থান নেওয়া জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি আবদুল মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।