লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমাবন্দরে অবতরণের পর সেখান থেকে সরাসরি যুক্তরাজ্যের বিশেষায়িত হাসপাতাল ‘লন্ডন ক্লিনিকে’ পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া। বুধবার (৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় পৌনে ৫টার দিকে তারেক রহমান নিজে গাড়ি চালিয়ে বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছান।
এদিন বাংলাদেশ সময় বিকেল ২টা ৫৮ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমাবন্দরে অবতরণ করে খালেদা জিয়াকে বহনকারী রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি। বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান তারেক রহমান।
এসময় অসুস্থ মাকে জড়িয়ে ধরলে মা ও ছেলের মধ্যে এক আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়। বিএনপির চেয়ারপারসন সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই লন্ডন সফরে এসেছিলেন। এরপর তার আর কোনো বিদেশ সফর হয়নি। এই সময়ের মধ্যে তার সঙ্গে ছেলে তারেক রহমানেরও সরাসরি দেখা হয়নি। তারেক রহমান ছাড়াও বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান।
এসময় খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক ও সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদসহ অনেক নেতা-কর্মী উপস্থিত হন।
এর আগে, মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১১টা ৪৬ মিনিটে তাকে বহনকারী ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর ত্যাগ করে। কাতারের আমিরের পাঠানো এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকা থেকে দোহা হয়ে লন্ডনে পৌঁছেছে। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি খালেদা জিয়াকে লন্ডন ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, এই সফরে চারজন চিকিৎসক ও প্যারামেডিকসের পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের ছয়জন সদস্যকে নেয়া হয়েছে। এছাড়া খালেদা জিয়ার ছোট ছেলের স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমানও গেছেন লন্ডনে।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যেতে বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার তাতে সায় দেয়নি। ফলে দেশেই চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার অস্ত্রোপচারসহ যাবতীয় চিকিৎসা চলছিল। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেয়া হয়। এরপর চিকিৎসা নিতে তার বিদেশ যাওয়ার পথ সুগম হয়।
উল্লেখ্য, লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।