বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়ক ভূমিকা পালনে পাঁচ দফা সুপারিশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল। সপ্তাহজুড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের সঙ্গে কথা বলা শেষে রোববার এক বিবৃতির মাধ্যমে দলটি এসব সুপারিশ দিয়েছে।
পাঁচ দফা সুপারিশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব বিষয় নিয়ে সব দলের সাথে আলোচনা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা ও ভোটে সব দলের অংশগ্রহণসহ সহিংসতা পরিহারের কথা বলা হলেও, বিএনপির তত্ত্ববধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে কোন বক্তব্য দেয়নি যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল।
তবে নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের পরিবেশ তৈরি করার সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র হ্রাস ও পরিবেশগত অগ্রগতি সত্ত্বেও রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন পরিস্থিতি বিষয়ে জানতে বাংলাদেশের বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে গত এক সপ্তাহজুড়ে ধারাবাহিক বৈঠক করেছে এ মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল।
তাদের অন্যতম পর্যবেক্ষণ হলো, আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ না করার পরিকল্পনা থাকতে পারে। নির্বাচনের আগে সবার গঠনমূলক অংশগ্রহণ এখনও নেই বলেও তারা উল্লেখ করেছে। সেই পরিবেশ তৈরি করার তাগিদও দিয়েছে প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলটি। এই পর্যবেক্ষণকে নির্বাচনের লিটমাস টেস্ট বলছে আইএরআই এবং এনডিআই।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আড়াই মাস আগে বাংলাদেশের নির্বাচনের পরিবেশ পর্যবেক্ষণে ঢাকা সফরে আসে যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলটি। গত ৭ অক্টোবর থেকে নির্বাচন কমিশন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পর সফরের পঞ্চম দিনে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে প্রতিনিধি দলটি। এর আগে এ দলের প্রতিনিধিরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গেও সচিবালয়ে বৈঠক করেন।
বিবৃতিতে যে পাঁচটি সুপারিশ করা হয়েছে, সেগুলো হলো- পরিমিত রাজনৈতিক বক্তৃতা এবং নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে প্রকাশ্য সংলাপে বসা; বাকস্বাধীনতার সুরক্ষা এবং নাগরিকদের জন্য এমন একটি জায়গা তৈরি করা, যেখানে ভিন্নমতকে সম্মান করা হয়; সহিংসতামুক্ত নির্বাচনের অঙ্গীকার, যারা রাজনৈতিক সহিংসতায় জড়িত তাদের জবাবদিহিতার মধ্যে নিয়ে আসা; স্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থাপনাসহ সব দলের অর্থপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার পরিস্থিতি তৈরি করা এবং নাগরিকদের মধ্যে সক্রিয় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনে অংশগ্রহণের সংস্কৃতি তৈরি করা ও তা এগিয়ে নেয়া।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র হ্রাস ও পরিবেশগত অগ্রগতির পরও রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা কমে গেছে। যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপর কালো ছায়া ফেলছে এবং অর্থনৈতিক ও উন্নয়নের ধারাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।