নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরতে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে সেখান থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা। আর এ লক্ষ্যেই বিশাল সমাবেশ করেছে তারা।
শুক্রবার কক্সবাজারের বালুখালীর লম্বাশিয়া ক্যাম্পে জড়ো হন শত শত রোহিঙ্গা। নাম দেয়া দেয়া হয় ২২২২ কনভেনশন। এই সংখ্যা ঐক্যের বার্তা বহন করে।
এদিন হঠাৎ করেই জড়ো হয় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের বড় একটি অংশ। নারী পুরুষের উপস্থিতি পরিণত হয় সমাবেশে।
আর এ সমাবেশের প্রধান অ্যাজেন্ডা ছিলো নিজ দেশি মিয়ানমারে ফিরে যেতে ঐকমত্য তৈরি ও কৌশল নির্ধারণ করার।
মিয়ানমারে চলমান সংঘর্ষে নিজের দেশ আঁকড়ে ধরে রাখতে সেখানে থাকা রোহিঙ্গাদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে সভা থেকে।
সভায় সমবেত রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে দেয়া নেতাদের এবারের বক্তব্যেও ছিলো ভিন্ন সুর।
রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার কামাল বলেন, রোহিঙ্গাদের নিজেদের একটি ভয়েস আছে, অধিকার আছে, দেশ আছে।
‘রোহিঙ্গারা এখন থেকে গলার স্বর বড় করবে, অধিকার ফিরে পেতে আওয়াজ তুলবে। সেই জন্য রোহিঙ্গাদের এক তাবুতে আনা জরুরি,’ বলেন তিনি।
রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার শোয়েব বলেন, এই সমাবেশ দেশে ফেরার কৌশল নির্ধারণ করার প্রথম পদক্ষেপ।
আর এখান থেকেই সবার মতামত নিয়ে প্রত্যাবাসনের পথটি ত্বরান্বিত করা হবে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন নেতা।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। সব চেয়ে বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে ২০১৭ সালে।
ওই বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গণহত্যা শুরু করলে জীবন বাঁচাতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ২০১৭ সালে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা।
সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের চলমান সংঘর্ষের মধ্যে বাংলাদেশে আবার নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তবে সেখানে থাকা রোহিঙ্গাদের দেশ ত্যাগ না করতে শুক্রবারের সমাবেশ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের অন্যতম নেতা মাস্টার নুরুল আলম বলেন, নির্যাতনের মুখে না পালিয়ে নিজের দেশকে আঁকড়ে থাকা উচিত ছিলো তাদের। তারা সেদিন যদি সব সহ্য করে দেশে থেকে যেতেন, তাহলে এখন দেশ ছাড়া হয়ে থাকতে হতো না।
তিনি রোহিঙ্গাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে সেখানে থাকা রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ যেনো দেশ ছেড়ে না পালায়।