মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দফায় দফায় মর্টারশেলের ও ভারি গোলা বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কক্সবাজারের টেকনাফের সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। ঈদের দিনেও টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং, হ্নীলা, শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনসহ বিভিন্ন সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে।
এতে করে সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থানে থাকার কথা জানিয়েছে কোস্টগার্ড ও বিজিবিসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়রা বলছে, ঈদের দিন ও শুক্রবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত সীমান্তের ওপার থেকে বিস্ফোরণের এসব বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। আতঙ্কে সীমান্তে বসবাসকারীদের জন্য নাফ নদী দিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া এবং টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে যাতায়াত করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, বৃহস্পতিবার ঈদের নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলাম, তখন মিয়ানমারের ওপার থেকে ভারি বিস্ফোরণের শব্দে এপারে ভেসে আসে। এতে সীমান্তের বাড়ি-ঘর কেঁপে উঠে। সারাদিন থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দে শোনা গেলেও রাতে তা তীব্র হয়ে উঠে।
শুক্রবার সকাল থেকে আবারো থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে বলে জানান স্থানীয় এ ইউপি সদস্য।
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের বাসিন্দা বলেন, মনে হচ্ছে মিয়ানমারের রাখাইনে আরাকান আর্মি এবং দেশটির সরকারি বাহিনীর মধ্যেই তীব্র সংঘর্ষ হচ্ছে। এ কারণে সীমান্তে আগের তুলনায় এখন বিস্ফোরণের শব্দ বেশি শোনা যাচ্ছে। ঈদের দিন ও মধ্যরাতসহ এখনো বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ওপার থেকে টেকনাফ সীমান্তে ভেসে আসছে।
সাবরাং ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছিদ্দিক আহমদ জানান, ঈদেও বন্ধ নেই মর্টারশেল আর বিস্ফোরণের শব্দ।
টেকনাফের উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া রোহিঙ্গাসহ মিয়ানমারের কোনও নাগরিক যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীগুলো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবি সর্বোচ্চ সর্তক রয়েছেন।