দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিরোধী দলের ওপর সরকারি দল ও প্রশাসনের হামলা-মামলা-গ্রেপ্তার নিয়ে ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করেছে বিএনপি।
বুধবার (২ আগস্ট) বিকেলে গুলশানের হোটেল লেকশোরে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। বৈঠকটি রুদ্ধদ্বার হওয়ায় হোটেলে প্রবেশাধিকারে কড়াকড়ি ছিল। ফলে, সাংবাদিকদের হোটেলের বাইরে অবস্থান করতে হয়েছে।
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর বিএনপির ফরেন অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেছেন।
তিনি বলেন, আজকে বিষয়টা ছিল ‘ব্রিফিং’। বিশেষ করে বর্তমান রাজনৈতিক ঘটনাবলি, কী ঘটছে, গত ২৯ তারিখে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকার ও সরকারি দলের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের যে যৌথ হামলা, মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার ইত্যাদি বিষয়গুলো আমরা বলেছি। যারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে, যারা বাংলাদেশে গণতন্ত্র দেখতে চায়, গণতান্ত্রিক অর্ডার দেখতে চায়, মানবাধিকার দেখতে চায় তাদের জানা দরকার। একথাগুলো আমরা আগে প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছি। আজকের ডিপ্লোমেটিক ব্রিফিংয়ে এ কথাগুলো বলেছি।
তিনি আরও বলেন, ওরা (বিদেশিরা) জানতে চায় কী হচ্ছে বাংলাদেশে। নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ যে পথে চলছে… ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। বিচার বিভাগকে ব্যবহার করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করা, সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
২৮ ও ২৯ জুলাই যথাক্রমে ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ ও রাজধানীর প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ ও সরকারি বাহিনীর সন্ত্রাসী হামলা, গ্রেপ্তার, নির্যাতনের ঘটনাও কূটনীতিকদের বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আমীর খসরু বলেন, এ ধরনের আক্রমণ, গ্রেপ্তার, যাদের আহত করা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা, অনেকে বিদেশে আছে, অনেকে হজে আছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা; উদ্দেশ্যটা বুঝাই যাচ্ছে। তাদের টার্গেট হচ্ছে আবার ভয়-ভীতি দেখিয়ে একটা নির্বাচনী কৌশলে ভোট চুরি করে আবার ক্ষমতা দখল করা।
আপনাদের বক্তব্যের পর বিদেশি কূটনীতিকরা কী বলেছেন- জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, আমরা তো সার্বিক পরিস্থিতি ব্রিফ করেছি। ওনাদের বলার বিষয় নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশে ও দেশের বাইরে এদের (সরকার) অধীনে যে নির্বাচন হবে না, এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। সেজন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কথাটা এসেছে।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, জাপান, চীন, রাশিয়াসহ ২৫টি দেশের কূটনীতিকরা অংশ নেন।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, শামা ওবায়েদ, আসাদুজ্জামান আসাদ, নওশাদ জমির, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন, নজরুল ইসলাম আজাদ, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, রুমিন ফারহানা, ফারজানা শারমিন পুতুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।