টাকা দিয়ে ভোট কিনছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর কর্মীরা- এমন একটি ভিডিও গণমাধ্যমের হাতে এসেছে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের রূপগঞ্জের বরাবো বাজারের ৯ নং ওয়ার্ড সভাপতির নির্মাণাধীন বাড়ির নিচতলায় টাকা নেওয়ার জন্য অনেক মানুষ জড়ো হয়েছেন।
ভোটার আইডি কার্ড দেখে টাকা দেওয়া হচ্ছে তাদের। ৯ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি মুলজার, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা রতন মিয়া ও খোরশেদসহ বেশ কয়েকজন একত্রিত হয়ে টাকা বিতরণ করছেন।
ভোটার আইডি কার্ড দেখে প্রতি ভোটারকে ১ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে অপর এক ভিডিওতে দেখা যায়, সন্ধ্যাকালীন সময়ে একটি ঘরের মধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা বসে রয়েছেন আর জাতীয় পরিচয় পত্র দেখে টাকা দেওয়া হচ্ছে।
ভিডিওতে শোনা যায়, এক নারী বলছেন ‘আমি কখন নিছি?’ এসময় ঘরের মেঝেতে বসা একজন বলেন, ‘তোর কথা কয়নি (বলেনি), তোর মায়েরটা লইয়া গেছে। আব্বারটা নিছে। ’
আওয়ামী লীগের সভাপতি মুলজারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় কথা হয় স্থানীয় এক নারীর সঙ্গে।
নাম জানতে চাইলে তিনি মুমিনের মা বলে পরিচয় দেন। কিসের টাকা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমনেই দিছে। তবে ভোটার হইলে টাকা দেবে।
দুই ভিডিওর ঘটনার বিষয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে ‘কেটলি’ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়া নির্বাচিত হবেন। এমন ভয়ে ভোটের দুই দিন আগেই টাকা দিয়ে ভোট কেনা শুরু করেছেন গোলাম দস্তগীর গাজী।
তারা বলেন, গত ১৫ বছরে সংসদ সদস্য থাকাকালীন গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার ছেলেরা কারখানা ও আবাসন প্রকল্পের নামে হাজার হাজার মানুষের চাষের জমি দখল করেন। তাই, যেকোন মূল্যে তাদের প্রতিহত করতে চায় রূপগঞ্জবাসী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, ‘মুলজার সাহেব মন্ত্রী সাহেবের কাছের লোক। তারাবোর ৯ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি। এই এলাকার নির্বাচনের দায়িত্বেও তিনি আছে। তাই কাছের লোকদের আগে আগেই টাকা দিচ্ছেন। ’
ভোট দেওয়ার জন্য টাকা দিচ্ছে কি-না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যারা টাকা পাচ্ছে তারা এই এলাকারই ভোটার। বাড়তি কিছু বললে সমস্যা আছে। ’
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ মাহমুদ হাসান রাসেল বলেন, এ ধরনের অভিযোগ শুনেছি। ভিডিও ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।