রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে এ ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ।
এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব নিউক্লিয়ার ক্লাবের ৩৩তম সদস্য হলো। সেই সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী দেশের কাতারে উঠে এলো।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে এবং রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মস্কো থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন। এ সময় আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার(আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রসি ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা থেকে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ রূপপুর সাইট থেকে ইউরেনিয়ামের সার্টিফিকেট শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করেন। এ সময় লিখাচেভ ছিলেন রূপপুরে মূল অনুষ্ঠানস্থলে। সেখান থেকে তিনি অনুমতি দেওয়ার পর গণভবনে তার প্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেন।
এ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের প্রথম ব্যাচের জ্বালানি গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাশিয়া থেকে বিমানে দেশে আনা হয়। গেল ২৯ সেপ্টেম্বর এ জ্বালানি রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছায়। জ্বালানি হস্তান্তরে প্রকল্প সাইটে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রথম ব্যাচের এ ইউরেনিয়াম সাত ধাপে দেশে আনা হচ্ছে। বাকি ছয় ধাপেও জ্বালানি রাশিয়া থেকে দ্রুত এসে পৌঁছাবে। বৃহস্পতিবার আরও এক ধাপে আসার কথা রয়েছে। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই ধাপে ধাপে ইউরেনিয়াম আনা হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আইএইএ মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রসি, রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আলী হোসেন।
বর্তমানে পৃথিবীর ৩২টি দেশে ৪৪৯টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। সেগুলো থেকে উৎপন্ন বিদ্যুতের পরিমাণ মোট উৎপন্ন বিদ্যুতের প্রায় ১২ শতাংশ। ১৪টি দেশে আরও ৬৫টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন। ২০২৫ সাল নাগাদ ২৭টি দেশে ১৭৩টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান।
এদিকে গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান উপলক্ষে পুরো বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকা নানা রঙের ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ছবি রয়েছে।