১৪ দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু বলেছেন, তারা (বিএনপি) ফাইনাল খেলতে চান, সেটা তো বহুদূরে। কিন্তু ফাইনালের আগে যে লিগ খেলা হয়, সেই লিগ খেলতেই তো তাদের পা ভেঙে যাবে। এটা কি তারা বুঝতে পারেন না? আপনাদের কষ্ট করে ফাইনাল খেলা পর্যন্ত আর আসতে হবে না। আপনারা ফাইনালে খেলার প্লেয়ারই না।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ১৪ দলের সমাবেশ ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিইবি) মিলনায়তনে এ কর্মসূচি করা হয়।
গণতন্ত্র ও উন্নয়নের অভিযাত্রা ব্যাহত করতে বিএনপিসহ দেশবিরোধী অপশক্তির সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এ সমাবেশ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আমির হোসেন আমু বলেন, আমরা কোনো নৈরাজ্য চাই না, কোনো বিশৃঙ্খলাও চাই না। কিন্তু বিশৃঙ্খল অবস্থা করার অপচেষ্টা করলে আমরা ঘরে বসে থাকবো না। জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিহত করবো। মানুষের জানমাল ও রাষ্ট্রের সম্পদের ক্ষতি হতে দেবো না।
১৪ দলের মুখপাত্র বলেন, গণতান্ত্রিক পন্থায় আমরা রাজপথে আন্দোলনে ছিলাম, আন্দোলনে থাকবো। প্রয়োজনে যখন যেভাবে দরকার। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী বারবার তাদেরকে (বিএনপি) কাজ করার সুযোগ দেওয়ার কথা বলে যাচ্ছেন। বার বার তিনি বলছেন, কেউ বাধা দেবেন না। তাদেরকে আন্দোলন করতে দেন। কিন্তু তারা তো বাধা চান। তারা পুলিশের গায়ে পেট্রল মারেন, ইট মারেন। যাতে পুলিশ তাদের ওপর হামলা করে। যাতে তারা বলতে পারেন পুলিশ আমাদের ওপর হামলা করেছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্যদিয়ে দেশের সংবিধানের চার মূলনীতি ফেলে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল। সাম্প্রদায়িক রাজনীতির করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল।
আমু আরও বলেন, আজকে তাদের আন্দোলনে নৈরাজ্য সৃষ্টি মূল লক্ষ্য, নির্বাচন নয়। এ দেশে একটি অস্বস্তি ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ফের কোনোরকম ক্ষমতার অদল-বদল করা যায় কি না, তারা সেই হিসাব-নিকাশ কষছেন। কিন্তু সেই হিসাবে অনেক গরমিল। অনেক পানি গড়িয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের মানুষের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ তা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করতে পারছে।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে যারা মেনে নিতে পারেনি, আজকে তাদের প্রেতাত্মারাই তথাকথিত রাজনৈতিক দল গঠন করে এ দেশে আবার নৈরাজ্য সৃষ্টি করে অরাজনৈতিক সরকার গঠনের পাঁয়তারা করছে। আজকে তারা যদি মনে করেন, তারা আবার একইভাবে এগোতে পারবেন, তাহলে তারা ভুল করছেন। মস্ত বড় ভুল করছেন।
১৪ দলের মুখপাত্র আরও বলেন, বিগত দুটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার মধ্যদিয়ে আপনারা প্রমাণ করেছেন, বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায়। আপনারা জনগণকে ভয় পান। জনগণ আপনাদেরকে ভোট দেবে না, এটাও আপনারা জানেন। আপনারা জনগণের দ্বারা প্রত্যাখিত। তাই ছলে বলে কৌশলে সবসময় নির্বাচন থেকে দূরে থাকতে চান, দূরে সরে আছেন এবং আগামীতেও থাকবেন। এটা আমরা জানি, আমরা বুঝি।
আমির হোসেন আমু বলেন, তাদের কেউ বলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, কেউ বলেন নির্বাচনকালীন সরকার। আবার কেউ বলে বেড়ান জাতীয় সরকার। যার যা খুশি একটা বলে দেন। একটা সময় হয়তো বলবেন, আমাদের সরকার ছাড়া নির্বাচন করবো না। তাদের সরকার যদি হয়, তাহলে তারা নির্বাচন করবেন। আর তাদের সরকারের সময় নির্বাচনের ফল আমরা জানি। তাদের আমল থেকেই নির্বাচনে কারচুপি, ভোটের হাইজ্যাক সবকিছুর শুরু।
সমাবেশ ও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ১৪ দলের নেতা বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, সাম্যবাদী দলের সভাপতি দিলীপ বড়ুয়া প্রমুখ।