ভারতের লোকসভা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে জোট শরিকদের সমর্থনে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করেও শান্তিতে নেই নরেন্দ্র মোদীর দল- বিজেপি। শুরু থেকেই শরিকদের আবদার মেটাতে গিয়ে হিমশিম খাওয়া বিজেপির সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ- স্পিকার নির্বাচন।
১৮তম লোকসভার স্পিকার নির্বাচনে ২৬ জুন পর্যন্ত সময়সীমা বেদে দিয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। আর এটা নিয়েই এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে ভারতীয় রাজনীতির সর্বত্র। ২৪ জুন থেকে ভারতের সংসদে শুরু হতে চলেছে বর্ষাকালীন অধিবেশন, আর তখনই নির্বাচিত হবেন স্পিকার।
আর এই অধিবেশন শুরুর আগে যে প্রশ্ন ‘এনডিএ’ এবং ‘ইনডিয়া’ দুই জোটে ঘোরাফেরা করছে, সেটা হলো- লোকসভার স্পিকার শেষমেশ কে হবেন? স্পিকার পদ নিয়ে জটিলতা কাটাতে রীতিমতো দৌড়ঝাঁপ করছেন বিজেপি নেতারা। প্রাক্তন স্পিকার ওম বিড়লার দিল্লির বাসভবনে দীর্ঘ বৈঠকও করেছেন বিজেপি নেতারা।
ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, লোকসভায় স্পিকার নির্বাচন নিয়ে নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জে রয়েছে বিজেপি, কারণ পদটি নিজেদের কাছেই রাখতে চাইছে দলটি। আর ডেপুটি স্পিকারের পদ দিতে চাইছে শরিকদলকে। এনিয়ে শরিক ও বিরোধীদের সঙ্গে ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে চায় বিজেপি।
স্বাধীনতার পর থেকে এতদিন পর্যন্ত কখনও লোকসভার স্পিকার নির্বাচনের জন্য ভোটাভুটি হয়নি। সবসময় সর্বসম্মতভাবেই লোকসভার স্পিকারকে বেছে নিয়েছে সংসদ। তবে এবার সেই ঘটনার ব্যতিক্রম হলেও হতে পারে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞরা। তাই বিজেপি’র জন্য প্রার্থী চূড়ান্ত করাটা হবে চ্যালেঞ্জের।
একটি বিষয় মোটামুটিভাবে স্পষ্ট হয়ে আছে যে, নরেন্দ্র মোদী কোনোভাবেই স্পিকার পদ হাতছাড়া করতে রাজি নন। সে ঝুঁকি তিনি নেবেন না। কংগ্রেস ও ‘ইন্ডিয়া’ জোটও মোটামুটিভাবে তা বুঝে গেছে। কিন্তু তারা এখনো নিশ্চিত নয়, বিজেপি ডেপুটি স্পিকারের পদ বিরোধীদের ছাড়বে কি না।
যদি ছাড়ে, তাহলে স্পিকার পদে ‘ইনডিয়া’ প্রার্থী দেবে না। না ছাড়লে কী হবে, তা সবার সঙ্গে আলোচনার পরই ঠিক করা হবে। রীতি অনুসারে স্পিকার নির্বাচিত হন সর্বসম্মতভাবে। এবার তা হবে কি না সন্দেহ। কংগ্রেস মনে করছে, ওম বিড়লাকেই স্পিকার হিসাবে রেখে দিতে পারে বিজেপি।
তবে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলুগু দেশম পার্টি এবং নীতীশ কুমারের জেডিইউয়ের তরফে লোকসভার স্পিকার পদের দাবি জানানো হলেও নীতীশের দল এখন অনেকটা নরম হয়েছে। টিডিপি অবশ্য এখনও তাদের দাবি থেকে সরে এসেছে বলে খবর নেই।