নিজস্ব প্রতিবেদক: সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কমার্স ব্যাংকে আবারও টাকা তছরুপের ঘটনা ঘটেছে। একারনে ব্যাংকটির তেজগাও লিংক রোড শাখার ব্যবস্থাপক মাসুদুর রহমান থেকে শুরু করে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অব্যাহতি দেয়ার খবর পাওয়া গেছে। বরখাস্তকৃত ম্যানেজার মাসুদুর রহমান প্রতিবেদককে জানান, তানভির রাশিদ নামের এক ব্যবসায়ী ব্যাংকটির এমডি মোসলেউদ্দিনের সহযোগীতায় এক ধরনের ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে তেজগাও লিংক রোড শাখা থেকে প্রাপয় ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে দেশে বাইরে পালিয়ে গেছে।
এই খবর পাওয়ার পর ব্যাংকের অভ্যান্তরিন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ম্যানেজান মাসুদুর রহমানসহ কয়েকজনকে বখাস্ত এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলে উদ্দনকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বলে জানায় বখাস্তকৃত ম্যানেজার মাসুদুর রহমান। মাসুদুর রহমান আরো বলেন এতবড় একটি ঋন কোনো ভাবেই এমডি মোসলে উদ্দিনের জানার বাইরে নয়। তাদের কথামত বোর্ড মিটিয়ের সিন্ধান্ত মোতাবেকই ব্যবসায়ী পলাতক তানভির রাশিদকে ঋন দেয়া হয়। এখন যেহেতু শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে তিনি কর্মরত আছেন তাই সব দায় তাকেউ নিতে হবে পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কমার্স ব্যাংক কতৃপক্ষ।
মাসুদুর রহমান আরো জানান ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকা অবস্থাতেই ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের (এসবিএসি) চেয়ারম্যান থেকে এসএম আমজাদ হোসেন পদত্যাগ করেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি এসবিএসি ব্যাংক পর্ষদের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। অথচ ব্যাংকের সকল অপকর্মের মূল হোতা অব্যহতিপ্রাপ্ত এমডি মোসলেউদ্দিনের।
মাসুদুর রহমান জানান এসবিএসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম আমজাদ হোসেনের অনিয়ম তদন্ত করে দুর্নীতি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) বিভিন্ন সংস্থা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও (এনবিআর) । পরে এসবিএসি ব্যাংকে পৃথক তিনটি চিঠি পাঠিয়েছে দুদক। এসব চিঠিতে এসএম আমজাদ হোসেনের অনিয়ম-দুর্নীতির পাশাপাশি ব্যাংকঋণ ও লেনদেনের যাবতীয় তথ্য চাওয়া হয়। দুর্নীতি তদন্তে মাঠে নেমে ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের কেওয়াইসিসহ যাবতীয় তথ্যের পাশাপাশি ব্যাংক লেনদেনের তথ্য চাওয়া হয়।
অন্য একটি চিঠিতে এসএম আমজাদ হোসেনের ব্যাংক ঋণ সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য চাওয়া হয়েছে। তৃতীয় চিঠিতে এসবিএসি ব্যাংক থেকে নেয়া ২৬০ কোটি টাকার ঋণসহ গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ চাওয়া হয়। কিন্তু চাওয়া হয়নি এমডি মোছলে উদ্দিনের তথ্য। মাসুদুর রহমান জানায় তখন এই এমডি মোসলে উদ্দিন নিজের অপকর্ম লুকানোর জন্য যোগসাজসে ব্যাংকের চেয়ারম্যানের তথ্য ফাস করে দেয়। যে অপকর্মে সে নিজেও জড়িত ছিলো।
তখন তদন্তে সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে শতকোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি, দুর্নীতি ও বিদেশে অর্থ পাচারের তথ্য পায় দুদক। এসবিএসির চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনের ঋণ জালিয়াতির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল ইসলামসহ ৯ জনকে তলব করলেও মোসলে উদ্দিনকে তলব করেনী দুদক।
তখণ এসবিএসির সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনের অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিষয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে গোয়েন্দা প্রতিবেদন সংগ্রহ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আমজাদ হোসেন খুলনা বিল্ডার্স লিমিটেড নামের একটি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ২০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করান। পরে তা আত্মসাৎ করেন। কর্মচারীদের নামে জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ নিয়েও ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে বিএফআইইউর প্রতিবেদনের উল্লেখ করা হয়। বাকিরা ফাসলেও কৌশলে নিজেকে নিরাপদ রাখেন মোসলে উদ্দিন।
খোজে নিয়ে জানাযায় মোসলে উদ্দিনের সাথে বিএনপির একটি যোগসূত্র রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে এই নিয়ে অভিযোগ দাখিল করেছে কেউ কেউ। সেখান থেকে জানাযায়,
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহামান ও খাম্বা মামুনের প্রধান অর্থ যোগানদাতা ও লন্ডনে তারেক রহমানকে হুডির মাধ্যমে অর্থপাচারে উত্তরের ব্যাবসায়িক অংশীদার সাউথ বাংলা ব্যাংকের পরিচালক ও চুয়াডাঙ্গা জেলা বি এন পির নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোখলেচুর রহমান ওরফে টিপু তরফদার ও অর্থ পাচারের সহায়তাকারী একই ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহউদ্দিন।
সেখানে বলাহয় , বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও খাম্বা মামুনের ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানে সাবকন্ট্রাক্ট হিসাবে বৈদ্যুতিক পিলারের কাজ করত এই ইঞ্জিনিয়ার মোখলেচুর রহামান। পরবর্তিতে তারেক রহমান ও মামুনের পরামর্শে এই মোখলেচুর রহামান ১১ টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। এক এগারোর পরিবর্তনের সময় তারেক রহামান ও খাম্বা মামুনের সকল অর্থ ও ব্যাবসা নিরাপদ হিসাবে ইঞ্জিনিয়ার মোখলেচুর রহামানের নিকট চলে আসে। পরবর্তিতে তারেক রহমানের লন্ডনের সকল খরচ ও দেশে যারা মামুনের পরিবারের যাবতীয় খরচসহ মামলার সকল খরচ এই ইঞ্জিনিয়ার মোখলেচুর রহামান বহন করেন।
অথচ ২০১৩ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি ৯ টি নতুন ব্যাংকের অনুমোদন প্রদান করলে ইঞ্জিনিয়ার মোখলেচুর রহামান সাউথ বাংলা ব্যাংকের পরিচালক হয়ে যান। এভাবেই বি এন পির দুটেরা সরকারের ভিতরে ঢুকে পড়ে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। বর্তমানে ইঞ্জিনিয়ার মোখলেচুর রহামানের লন্ডনে তারেক রহমানকে টাকা পাঠানোর নিরাপন ব্যাবস্থা করে দিয়েছেন এই ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহউদ্দিন কারণ ইঞ্জিনিয়ার মোখলেচুর রহামান ও মোসলেহ উদ্দিনের বাড়ি একই জেলা চুয়াডাঙ্গায়।
জনাব মোসলেহউদ্দিন এন সি সি ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় বি এফ আই ইউ কর্তৃক উনার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং জনিত অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় এন সি সি ব্যাংক হতে চাকরীচ্যুত হন এবং বিষয়টি দুদুকে প্রেরণ করা হলেও অদৃশ্য কারণে দুপুর হতে ছাড়পত্র পেয়ে যান।
বর্তমানে এমডি মোসলে উদ্দিনের নির্দেশে প্রতারক ব্যবসায়ী তানভিরকে ১৫ কোটি টাকা ঋন দিলেও মোসলে উদ্দিন নিজে অস্বীকার করে নিরীহ ম্যানেজারকে চাকুরীচূত্য করিয়েছেন।