শরিকদের উপর নির্ভর করে সরকার গঠন করলেও সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় নিজেদের হাতেই রেখেছে বিজেপি।
নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় বিজেপি নেতারা পেলেন প্রধান প্রধান সব মন্ত্রণালয়। তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এনডিএ’র ছোট শরিকদের। মন্ত্রিসভায় শরিকদের পাঁচ জনকে পূর্ণমন্ত্রী করেছে বিজেপি। স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হয়েছেন দু’জন। এ ছাড়া চার জনকে দেয়া হয়েছে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব।
কর্নাটকের অন্যতম প্রধান শরিক জেডিএসসের এইচ ডি কুমারস্বামীকে ভারী শিল্প এবং ইস্পাত মন্ত্রীর পদ দেয়া হয়েছে। কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের মন্ত্রী করা হয়েছে হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চার জিতন রাম মাঞ্জি। বিহার থেকে জয়ী হয়েছেন তিনি। ওই রাজ্যে নীতীশ কুমারের দলকে একটি পূর্ণমন্ত্রী দেয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত রাজ, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ ও দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী করা হয়েছে জেডিইউয়ের রাজীবরঞ্জন সিংহকে।
এ ছাড়া বিহারের আরেক শরিক লোক জনশক্তি পার্টির চিরাগ পাসওয়ানকে খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ শিল্পের মন্ত্রী করা হয়েছে।
বিজেপির অন্যতম প্রধান শরিক তেলুগু দেশম পার্টি-টিডিপিকে দেয়া হয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। ওই দপ্তরের মন্ত্রী করা হয়েছে টিডিপির কিনজারাপু রামমোহন নায়ডুকে।
স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী করা হয়েছে শিবসেনার প্রতাপরাও যাদবকে। রাষ্ট্রীয় লোক দলের জয়ন্ত চৌধুরিকে দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্যোগ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী করা হয়েছে। অন্য দিকে, রিপাবলিকান পার্টি অফ ইন্ডিয়ার নেতা রামদাস অঠওয়ালেকে সামাজিক ন্যায় এবং ক্ষমতায়নের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে জেডিইউ’র রামনাথ ঠাকুরকে।
আপনা দলের অনুপ্রিয়া পাটেলকে স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ এবং সার ও রাসায়নিক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। টিডিপি’র চন্দ্রশেখর পেম্মাসনি মোদীর মন্ত্রিসভায় গ্রামীণ উন্নয়ন এবং যোগাযোগ মন্ত্রণায়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।
এনডিএ সরকারের মন্ত্রিপরিষদে কোনো পূর্ণমন্ত্রী না পাওয়ায় সোমবার হতাশা প্রকাশ করেছে শিবসেনা। অজিত পাওয়ারের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) মন্ত্রিত্ব দাবি দাবি করার একদিন পরেই শিবসেনার দাবি সামনে এলো।
নতুন মন্ত্রিপরিষদে এনডিএর অন্যান্য মিত্রদের আনুপাতিক হার তুলে ধরে একনাথ সিন্ধের শিবসেনার প্রধান হুইপ শ্রীরং বার্নে বলেন, আমরা অন্তত একজন মন্ত্রী আশা করেছিলাম।
তিনি বলেন, চিরাগ পাসোয়ান পাঁচজন, জিতন রাম মাঞ্জি একজন এবং জেডিএস থেকে মাত্র দুইজন সংসদ সদস্য। তবুও তারা প্রত্যেকে মন্ত্রিসভায় একটি করে পদ পেয়েছেন।
‘আর আমাদের সাতটি লোকসভা আসন থাকা সত্ত্বেও, শিবসেনা থেকে কেন শুধু মাত্র একজন স্বাধীন দায়িত্বের প্রতিমন্ত্রী পেল,’ ক্ষোভের সঙ্গে এ প্রশ্ন তলে বার্নে বলেন, শিবসেনা বিজেপির পুরোনো মিত্র। অন্তত এর জন্য হলেও শিবসেনার পূর্ণ মন্ত্রী পদ পাওয়া উচিত ছিল।
এদিকে এনডিএ জোটের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন মহারাষ্ট্রের এনসিপি। একজন হলেও পূর্ণমন্ত্রী চান তারা। তবে এই এনডিএ মিত্রকে তা না দিয়ে একজন প্রতিমন্ত্রীর দেওয়ায় রোববার শপথের দিনই ক্ষোভ ঝাড়েন দলটির নেতারা। এনসিপির প্রধান অজিত পাওয়ার প্রতিমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে বিজেপির অন্যতম মিত্র মহারাষ্ট্রে সাতটি আসনে আর এনসিপি বিজয়ী হয় চার আসনে। মহারাষ্ট্রে নয়টি আসনে জয় পেয়েছে বিজেপি।