পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে তিন পার্বত্য জেলায় শান্ত থাকতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ আহ্বান জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গতকাল খাগড়াছড়ি ও আজ রাঙামাটিতে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে আন্তরিকভাবে কাজ করছে সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর জনৈক ব্যক্তিকে গণপিটুনি ও পরবর্তীতে তার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলমান হামলা, আক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনায় সরকার গভীরভাবে দুঃখিত এবং ব্যথিত।
‘সরকারের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সকল বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে এবং পার্বত্য তিন জেলায় বসবাসকারী সকল জনগনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে শান্তি, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি নিশ্চিতকরণে সরকার বদ্ধপরিকর,’ উল্লেখ করা হয়ে বর্তায় ।
প্রধান উপদেষ্টার বার্তায় বলা হয়েছে, আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়া এবং ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত না হওয়ার জন্য সকলকে নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে। আইন নিজ হাতে তুলে নেওয়া এবং যে কোনো সম্পত্তি ধ্বংস করা দণ্ডনীয় ও গর্হিত অপরাধ।
‘সহিংসতার সাথে সম্পর্কিত সকল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত আর দায়ী ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করা হবে। এ লক্ষ্যে একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি খুব শীঘ্রই গঠন করা হবে। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে,’ বলা হয়েছে বার্তায়।
শনিবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি পরিদর্শন করবেন বলেও ওই বার্তায় জানানো হয়েছে।
প্রতিনিধি দলে থাকবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এবং প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী।
দীঘিনালায় পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের জেরে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কিছু অংশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
রাঙ্গামাটিতে সংঘর্ষের ঘটনার পর পৌর এলাকায় শুক্রবার বেলা একটা থেকে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। আর খাগড়াছড়ির সদর উপজেলায় বেলা দুইটা থেকে ১৪৪ ধারার নোটিশ জারি করা হয়েছে।
খাগড়াছড়িতে সংঘর্ষে নিহত তিনখাগড়াছড়িতে সংঘর্ষে নিহত তিন
খাগড়াছড়ির দীঘিনালার পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের জের এদিন সকালে রাঙ্গামাটিতেও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে সংঘর্ষ, গাড়ি ভাঙচুর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বাঙালি ও পাহাড়িদের মধ্যে সংঘর্ষে তিন জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত ১৭ জন হাসাপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ চারজন।
সংঘর্ষে জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল চাকমা (৩০) নামে তিন জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।