আওয়ামী লীগ সরকার ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় আছে বলেই দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার সকাল ১০টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ প্রাঙ্গণে প্রকৌশলীদের প্রতিষ্ঠান আইইবি’র ৬১ তম কনভেনশনের উদ্বোধন করে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রকৌশলীদের বেশি বেশি গবেষণার ওপর তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, প্রকৌশলীদের গবেষণা করা দরকার। কৃষিখাতে আমাদের উৎপাদন বেড়েছে, গ্যাস, জ্বালানি এসব বিষয়ে গবেষণা বাড়াতে হবে।
নিজের বক্তব্যে কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণে প্রকৌশলীদের নতুন নতুন উদ্ভাবনের উপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের উন্নয়নের গতিশীলতা আনায় প্রকৌশলীদের ভূমিকার প্রশংসা করে সরকারপ্রধান সব পরিকল্পনা পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী টেকসই করার নির্দেশ দেন।
স্বল্প খরচের টেকসই উন্নয়নের উপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা, সেই দিকে লক্ষ্য রেখে সব স্থাপনা তৈরী করতে হবে।
পৃথিবীর অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে রাস্তা বানাতে এত খরচ কেন হয় অনেকে এমন প্রশ্নের জবাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মাটি সম্পর্কে যাদের ধারণা নেই তারাই এমন প্রশ্ন করে। এদেশের মাটি নরম দোআঁশ, তাই রাস্তার বানানোর জন্য প্রথমে মাটিকে তৈরী করতে হয়। বিদেশের মাটি আমাদের মতো ব-দ্বীপের মাটির মত নরম নয় যেখানে পলি পড়ে ভূমি তৈরি হয়।
তিনি বলেন, জলাধার এবং খাল এলাকায় মাটি ভরাট করে কোন রাস্তা করা যাবে না। কোথাও রাস্তা করতে হলে কোন জলাধার আটকে দেয়া যাবে না, সেখানে কালভার্ট করতেই হবে। এগুলোকে মাথায় রেখেই কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো বিষয়ে গবেষণা বাড়াতে হবে। হাইড্রোজেন বিদ্যুৎ কীভাবে উৎপাদন করা যায় সেটা গবেষণা করা দরকার। স্বল্প খরচে যন্ত্রপাতি নির্মাণ এসব বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে। কীভাবে বিকল্প জ্বালানি উৎপাদন করতে পারি, যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও কীভাবে উন্নয়ন করতে পারি এসব বিষয় নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার।
বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা যেন না হয় সেভাবে পরিকল্পনা করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, পানি যেন জমে না থাকে, যখনই যেই পরিকল্পনা করবেন, খেয়াল রাখবেন পানি যেন জমে না থাকে সেই ব্যবস্থা করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে স্যাটেলাইটের কি প্রয়োজন এমন প্রশ্ন করে, আজকের স্যাটেলাইট আছে দেখেই বিদেশিদের কোন ডলার দিতে হচ্ছে না। নিজেদের স্যাটেলাইট দিয়ে টেলিভিশন চলছে।
তিনি আরও বলেন, একটি গোষ্ঠী আছে যাদের কোন কিছুই ভালো লাগেনা তারা প্রশ্ন করে পদ্মা সেতুপদ্মা সেতুতে রেল কেন হল? মেট্রোরেলের কি প্রয়োজন? পারমাণবিক বিদ্যুতের কি দরকার? দেশের উন্নয়ন যাদের ভালো লাগে না তাদের কথাকে গুরুত্ব না দিয়ে সাধারণ মানুষের ভালো থাকার জন্য দেশেকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যারা উন্নয়ন পছন্দ করেন না তারা গাড়িতে কেন চলাচল করেন? তাদের তো গরুর গাড়িতে চড়া উচিত। ধারাবাহিকভাবে সরকারে আছি বলেই দেশে উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। এই উন্নয়ন ধরে রাখতে হবে।
পাঁচ দিনব্যাপী আয়োজিত ৬১ তম কনভেনশনে সমাপনী অনুষ্ঠান, জাতীয় সেমিনারের উদ্বোধনী ও সমাপনী পর্ব, শহীদ প্রকৌশলী পরিবারের সংবর্ধনা, চারটি স্মৃতি বক্তৃতাসহ বিদেশি অতিথিদের সংবর্ধণা এবং বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে।