সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের খুনের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে কিলিং মিশনের নায়ক বলেছেন জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ। এই ঘটনায় আরও মাস্টারমাইন্ড থাকলে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
এমনটি জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (১৬ জুন) জামালপুরের বকশীগঞ্জের পাথাটিয়ায় সাংবাদিক নাদিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে পুলিশ সুপার এসব কথা জানান।
হত্যাকাণ্ডের কথা প্রথম কখন জানলেন এমন প্রশ্নের জবাবে এসপি নাছির বলেন, রাত সাড়ে দশটার দিকে আমি জানি, সে সময় ভিডিও ফুটেজও পাই। এএসপিকে থানায় থাকতে বলে ওসিসহ পুরো টিমকে পাঠাই আসামিদের আটক করতে।
আপনি এর আগে বলেছিলেন যে, হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা হয়নি। কেন এমন বলেছিলেন, জানতে চাইলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, প্রথমে আঘাতগুলো দেখেছি, সেটা দেখে মনে হয়েছিল। মাহমুদুল আলম বাবুর ছেলে ইট দিয়ে এমনভাবে থেঁতলে দিয়েছে, যাতে বাইরে রক্তক্ষরণ হয়নি, ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়েছে, তখন তো অবশ্যই হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত।
হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘসময় পরও মূল আসামি কেন আটক হননি এবং ওসি বলেছেন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়নি- এ সম্পর্কে এসপি নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ওসি সত্যিকার অর্থে ভুল বলেছেন। এলআইসি টিম আমার আন্ডারে থাকে, টিম মাঠে আছে। লাইভে বলেছি লোকেশন দেখছি, কোন দিকে আছে। পেছন পেছন যাচ্ছে। মাহমুদুল আলম বাবু কিলিং মিশনের নায়ক। সেটা প্রথম থেকেই জানি।
চেয়ারম্যান বাবুর আত্মীয় পুলিশের সাবেক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা- পরিবারের এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রথম থেকে বাবুর নাম আমি বলেছি, তিনি প্ল্যানমেকার। প্রত্যেকটা জায়গায় বলেছি। আমাদের ব্যাকাপ আছে। আরও মাস্টারমাইন্ড থাকতে পারে, তারাও বের হয়ে আসবে।
হামলার পেছনে বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহীনা বেগম রয়েছেন- এমন অভিযোগের বিষয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের অপরাধ বিজ্ঞান বা আইন বলে, ঢাকা থেকে হামলার অংশ হতে পারবে না, তা সত্য না। যদি নাম আসে, আসামি করব। জড়িত থাকলে বা মামলা হলে আটক করা হবে।
বুধবার (১৪ জুন) রাতে বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জের পাথাটিয়ায় পৌঁছালে অস্ত্রধারী ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত সাংবাদিক নাদিমকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
এরপর রাত ১২টায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে তিনি মারা যান।
নাদিম হত্যাকাণ্ডে এ পর্যন্ত ছয়জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।