স্ত্রীর কবরের পাশেই চিরনিন্দ্রায় শায়িত হলেন ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’খ্যাত পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় টাঙ্গাইল পুরাতন বাসস্ট্যান্ড মসজিদে জানাজা শেষে কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে সোহানের মরদেহ নেওয়া হয় টাঙ্গাইল শহরের পলাশতলী এলাকায় অবস্থিত তার শ্বশুরবাড়িতে। এ সময় গুণী পরিচালককে শেষবার দেখার জন্য ভিড় করেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
স্বজনরা জানিয়েছেন, সোহান-প্রিয়ার ইচ্ছা ছিল মৃত্যুর পর তাদের দুজনকে যেন পাশাপাশি কবর দেওয়া হয়। তাদের ইচ্ছাতেই টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে স্ত্রীর কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্ট্রোকে মৃত্যুবরণ করেন সোহানের স্ত্রী প্রিয়া রহমান। পরের দিন (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সোহানুর রহমান সোহান। এক দিনের ব্যবধানে দুইজনের মৃত্যুতে শোকে পাথর স্বজন ও এলাকাবাসী।
১৯৭৭ সালে পরিচালক শিবলি সাদিকের সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্রে কর্মজীবন শুরু করেন সোহান। পরবর্তীতে শহীদুল হক খানের ‘কলমিলতা’ (১৯৮১), এজে মিন্টুর ‘অশান্তি’ (১৯৮৬) ও শিবলি সাদিকের ‘ভেজা চোখ’ (১৯৮৮) চলচ্চিত্রে সহকারী হিসেবে কাজ করেন।
১৯৮৮ সালে ‘বিশ্বাস অবিশ্বাস’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটে সোহানের। তবে ১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমা নির্মাণ করে সফলতার মুখ দেখেন তিনি। এটি বলিউডের ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ সিনেমার রিমেক ছিল।
সোহানুর রহমান সোহান নির্মিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো— ‘স্বজন’ (১৯৯৬), ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ (১৯৯৭), ‘মা যখন বিচারক’ (১৯৯৮), ‘অনন্ত ভালোবাসা’ (১৯৯৯), ‘কিলার’ (২০০০), ‘সত্যের বিজয়’ (২০০৩), ‘স্বামী ছিনতাই’ (২০০৪), ‘আমার জান আমার প্রাণ’ (২০০৮), ‘কোটি টাকার প্রেম’ (২০১১), ‘লোভে পাপ পাপে মৃত্যু’ (২০১৪), ‘জেদী’ (২০২২) প্রভৃতি।
সোহানুর রহমান সোহান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির টানা দুবার মহাসচিব এবং দু‘বার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।