প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যবসায়ীদের আন্তরিকতায় মুগ্ধ। তিনি ব্যবসায়ের পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা দিয়ে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘হাওয়া ভবনের মতো খাওয়া ভবন নেই। আপনাদের কেউ ঝামেলা করবে না। ব্যবসায়ীরা এগিয়ে আসুন। আপনারা কাজ করুন। আমরা আছি আপনাদের পাশে। আমরা সুযোগ-সুবিধা তৈরি করে দেবো। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করবো।’
শনিবার (১৫ জুলাই) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ব্যবসায়ী সম্মেলনে’ তিনি এসব কথা বলেন। দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হতে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা করবো। অনেক দেশ পিছিয়ে গেছে। আমরা পেছাবো না। বাংলাদেশ পারে, আমরা পারবো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কী কী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে, নিরূপণ করতে হবে, তা মূখ্য সচিবের নেতৃত্বে কমিটি করে দিয়েছি, এগুলো নিরূপণ করে মোকাবিলার পথে এগোতে হবে। পাশাপাশি কী কী সুবিধা পাবো, সেটাও দ্রুত গ্রহণ করতে হবে। এ সময় তিনি নতুন বাজার খুঁজতে ব্যবসায়ীদের তাগিদ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা দীর্ঘসময় ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য ছেড়ে বসে আছেন। আমরা তো অভ্যস্থ, সরকারের নানা সভায় যোগ দেই, সবার বক্তব্য শুনতে হয়, আবার দলীয় সভায়ও সবার বক্তব্য শুনতে হয়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। কিন্তু আপনারা যে আন্তরিকতার সঙ্গে সময় দিয়ে বসে রইলেন। আপনাদের এ আন্তরিকতা আমাদের চলার পথের পাথেয়।
তিনি বলেন, অনেকের কাছ থেকে অনেক তথ্য পেলাম, আমরা এগুলো নিয়ে কাজ করবো। সুযোগ-সুবিধা তৈরি করে দেবো, যাতে সবার ব্যবসা-বাণিজ্য করা সহজ হয়।
ব্যবসা-বাণিজ্যকে উৎসাহিত করা, সুযোগ তৈরি করে দেওয়া, পরিবেশ করে দেওয়ার কাজটি আমরা করছি উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যার যখন যেটা সুবিধা আমরা করে দেই। আমরা হাওয়া ভবন খুলিনি, খাওয়ারও ব্যবস্থা করিনি। সরকারের সুযোগ-সুবিধা ও অবকাঠামো করে দেওয়ার দরকার, আমরা সেটা করে দিচ্ছি। আপনারা কাজে লাগান, এগিয়ে যান।
দেশের মানুষের উদ্ভাবনী শক্তির প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমাদের মানুষের এত উদ্ভাবনী শক্তি; পার্বত্য চট্টগ্রামে কলাগাছ থেকে সুতা তৈরি করে সেটা দিয়ে শাড়ি বানিয়ে আমার কাছে আসার অপেক্ষায় আছে। আমাদের এ নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, নদীমার্তৃক বাংলাদেশে সেতু নির্মাণের মাধ্যমে সেতুবন্ধন তৈরি করেছি। এটা ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে সহজ হবে। সড়ক যোগাযোগসহ সব ধরনের অবকাঠামো করে দিয়েছি। অনলাইনে সব ধরনের সেবা দিচ্ছি, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তারপরও আপনি যাই করতে যান, বিরুদ্ধে বলবেই। মেট্রোরেল, পদ্মা সেতুর ভেতরে রেল- এসব নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছে। কিছু লোকের মানসিকতা হলো- কিছুই ভালো লাগে না। তাদের এ চিন্তা বাদ দিয়েই এগিয়ে যেতে হবে।
এ সময় সরকারি দপ্তরের তথ্যচুরি করার মধ্য দিয়ে এগুলো দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায় জানিয়ে কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এ সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিসহ সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও ব্যবসায়ী নেতারা।