বঙ্গবন্ধু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বড় প্রত্যাশা নিয়ে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। বুধবার বিকালে লেবানন মালদ্বীপকে ১-০ গোলে হারানোয় সেমিফাইনালের অঙ্কটা তাদের জন্য আরও সহজ হয়ে যায়। প্রতিপক্ষ ভুটানের বিপক্ষে একটি পয়েন্ট পেলেই ২০০৯ সালের পর সেমিফাইনাল নিশ্চিত। এমন সম্ভাবনায় শুরুতে ধাক্কা খেলেও বাংলাদেশ বুঝিয়ে দিয়েছে ম্যাচটা তারা খেলছে পূর্ণ তিন পয়েন্ট আর সেমির লক্ষ্য নিয়ে। পিছিয়ে পড়েও ৩-১ গোলে জিতে ১৪ বছর পর সাফের সেমিফাইনালে পৌঁছেছে বাংলাদেশ।
অথচ সাফের গত পাঁচটি আসরে বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বই পার হতে পারেনি। এবার সেমিফাইনালকে পাখির চোখ করেছিল। সেই লক্ষ্যপূরণ হওয়ায় সংকটের মধ্য দিয়ে যাওয়া দেশের ফুটবল থেকে অবশেষে এলো খুশির খবর। যা কোরবানির ঈদের আগে দেশবাসীর কাছে আনন্দ-উপহার হয়ে এসেছে। এবার ফাইনালে যাওয়ার পালা! সেমিতে ১ জুলাই বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কুয়েত।
ব্যাঙ্গালুরুর কান্তীরাভা স্টেডিয়ামে নামার আগে ভুটানের বিপক্ষে পরিসংখ্যান ছিল বাংলাদেশের পক্ষেই। সাফে আগের ৬ বারের দেখায় কখনও হারেনি লাল-সবুজরা। র্যা ঙ্কিংয়েও বাংলাদেশের চেয়ে সাত ধাপ এগিয়ে তারা! কিন্তু মাঠের খেলায় পাত্তা পায়নি মোটেই। ম্যাচের শুরুতে আক্রমণে গিয়ে গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল বাংলাদেশই। দ্বিতীয় মিনিটে শেখ মোরসালিনের কাটব্যাক থেকে সোহেল রানা জোরালো শট নিয়েছিলেন। কিন্তু গোলকিপার গেইলশেন জাংপো জায়গায় দাঁড়িয়ে এক ড্রপে সেটি তালুবন্দি করলে হতাশ হতে হয় তাদের।
৯ মিনিটে ভুটানও আক্রমণে গিয়েছিল। ডি বক্সের প্রান্ত থেকে শেরুব দর্জির জোরালো শট শুয়ে পড়ে তালুবন্দি করেছেন গোলকিপার জিকো। কিন্তু ১২ মিনিটে দারুণ এক গোলে বাংলাদেশ শিবিরে ভয় ধরিয়ে দেয় ভুটান। বক্সের বাইরে থেকে তপু বর্মণকে কাটিয়ে তিশেল থ্রিম নামগিল জোরালো শটে জিকোকে পরাস্ত করে ভুটানকে এগিয়ে নিয়েছিলেন। ১৮ মিনিটে দ্বিতীয় গোলও পেতে পারতো তারা। নিমা ওয়াংদি দু’জনকে কাটিয়ে বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নিলেও সেটি ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হয়েছে।
শুরুটা দুঃস্বপ্নের মতো হলেও বাংলাদেশ প্রভাব বিস্তার করা শুরু করে একটু গুছিয়ে নিয়ে। তাতে সমতা ফেরায় ২২ মিনিটেই। আগের ম্যাচের তৃতীয় গোলদাতা শেখ মোরসালিন দারণ এক শটে দলকে ম্যাচে ফিরিয়েছেন। রাকিবের পাসে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া মোরসালিন বাঁ পায়ের বুলেট গতির শট মুহূর্তেই ভুটানের জাল কাঁপিয়েছে।
আক্রমণে যাওয়া বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ৩০ মিনিটেই। এই গোলটিরও নেপথ্যেও ছিলেন মোসরাসিল। মোরসালিনের ক্রসে রাকিবের রিসিভ করার পর ভুটানের মান্থশো জিগমের শরীরে লেগে জড়িয়ে যায় জালে।
৩৬ মিনিটে রাকিবের দুর্দান্ত গোলে ব্যবধান বাড়ে আরও। একক প্রচেষ্টায় বক্সে ঢুকে প্রায় বাইলাইনের কাছাকাছি থেকে শট নিয়েছিলেন তিনি। পরে তা বাম প্রান্তের পোস্টের ভেতরে লেগে জড়িয়ে যায় জালে।
বিরতির পর দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ ৬টি পরিবর্তন এনেছে। তার পরেও আক্রমণে সেভাবে ধার ছিল না। ফলে ব্যবধানে হেরফের হয়নি। ভুটান চেষ্টা করেও পারেনি কিছু করতে।
তিনটি ম্যাচ জিতে ‘বি’ গ্রুপ থেকে গ্রুপ সেরা হয়েছে লেবানন। তাদের পয়েন্ট ৯। বাংলাদেশ ৬ পয়েন্ট নিয়ে রানার্সআপ হয়ে শেষ চার নিশ্চিত করেছে। ভুটানের
পয়েন্ট শূন্য।