রাষ্ট্র পরিচালনা এবং মূল সংস্কারগুলি সম্পূর্ণ করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেওয়ার অঙ্গীকার করে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, আগামী ১৮ মাসের মধ্যে যাতে নির্বাচন হতে পারে, সে জন্য তিনি যে কোনো পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করবেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন সেনাপ্রধান।
তিনি বলেছেন, আমি তাকে (ড. ইউনূস) সমর্থন করবো। পরিস্থিতি যাই হোক না কেনো। যেনো তিনি তার কাজ সম্পন্ন করতে পারেন।
বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণ আন্দোলনের অগ্রদূত ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৭ কোটি মানুষের দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ প্রশস্ত করা এবং বিচার বিভাগ, পুলিশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সেনাপ্রধান রয়টার্সকে বলেন, এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণ হওয়া উচিত।
‘আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, তাহলে আমি বলবো যে, এই সময়সীমার মধ্যে আমাদের একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করা উচিত,’ বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রতি সপ্তাহেই বৈঠক হওয়ার কথা জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমাদের মধ্যে সম্পর্ক খুব ভালো। আমি নিশ্চিত যে, আমরা যদি একসাথে কাজ করি, তবে আমাদের ব্যর্থ হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, তার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করবে না।
‘আমি এমন কিছু করবো না, যা আমার প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর। আমি একজন পেশাদার সৈনিক। আমি আমার সেনাবাহিনীকে পেশাদার রাখতে চাই,’ যোগ করেন তিনি।
সেনাবাহিনীকে সরাসরি রাষ্ট্রপতির অধীনে রাখা এবং দীর্ঘ মেয়াদে সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান থেকে দূরে রাখার ইচ্ছার কথাও জানান সেনাপ্রধান।
বলেন, এটি কেবল তখনই ঘটতে পারে, যখন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার কিছুটা ভারসাম্য থাকবে। সেক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনীকে সরাসরি রাষ্ট্রপতির অধীনে রাখা যেতে পারে।
বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী বর্তমানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন এবং সাধারণত প্রধানমন্ত্রীর নিজের কাছেই এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থাকে।
অন্তর্বর্তী সরকার সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে এ দিকটায় নজর দিতে পারে বলেও উল্লেখ করেন সেনাপ্রধান।
তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে সামরিক বাহিনীকে কখনোই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা উচিত নয়। কোনো অবস্থাতেই একজন সৈনিকের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া উচিত নয়।