সরকারের বিরুদ্ধে ভোট চুরির অভিযোগ তুলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করে ক্ষমতায় আসে। তাই পৃথিবীর সব মানুষ বলে গত দুটি ভোট সঠিক হয়নি। তারা ২০২৪ সালেও ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসতে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।
রোববার দুপুরে বগুড়া সদরের এরুলিয়া হাটখোলায় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল আয়োজিত এক দফা দাবিতে বগুড়া থেকে রাজশাহী তারুণ্যের রোডমার্চ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আজ চালের দাম ৭০-৮০ টাকা কেজি। সব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী। আওয়ামী লীগ সরকার শুধু পণ্যের দাম কমাতে ব্যর্থ নয়; দেশ চালাতেও ব্যর্থ হয়েছে। তারা লুট করে টাকা বিদেশ পাচার করছে। তাই তাদের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, তারেক রহমান বলেছেন, ফয়সালা হবে রাজপথে; তাই এ অবৈধ সরকারকে রাজপথে থেকেই বিদায় করতে হবে।
তিনি বলেন, ভোট চোররা আবারো ক্ষমতায় আসতে মাঠে নেমেছে। তাই ভোট চোরদের প্রতি নজর রাখতে হবে। এদের সঙ্গে যেসব আমলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, লুটেরা ব্যবসায়ী ও বিচার বিভাগের লোকজন আছে তাদের তালিকা তৈরি করতে হবে। আমেরিকা শুধু ওদের ভিসা বাতিল নয়; জনগণের কাছ থেকেও বাতিল করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাস্তবায়ন হলে আমাদের আন্দোলন শেষ হবে।
সাবেক উপমন্ত্রী ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, শেখ হাসিনা যতক্ষণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি বাস্তবায়ন না করবে ততক্ষণ আমাদের আন্দোলন চলবে। আমরা ঘরে ফিরে যাব না।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তার কিছু হলে সারা দেশে আগুন জ্বলবে।
ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টনের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত পথসভায় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইয়াসিন আলী, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি একেএম আহসানুল তৈয়ব জাকির, সহ-সভাপতি মাফতুন আহমেদ খান রুবেল, বিএনপি নেতা তৌহিদুল আলম মামুন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক খাদেমুল ইসলাম খাদেম, জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাইদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী রিগ্যান, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সংক্ষিপ্ত পথসভা শেষে প্রধান অতিথি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তারুণ্যের রোডমার্চ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। এরপর বগুড়ার আদমদীঘিতে পথসভায় মিলিত হন। সেখানে পথসভা শেষে নওগাঁর দিকে রওনা হয়।
বগুড়ায় সংক্ষিপ্ত পথসভার আয়োজন করা হলেও বিশাল জনসভায় রূপ নেন। শুধু বগুড়া নয়; আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা বিভিন্ন যানবাহনে সভাস্থলে আসেন। পথসভার শুরু ও শেষ হবার পর বগুড়া-নওগাঁ সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।