দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘প্লাটিনাম জয়ন্তী’ উদযাপন করবে আওয়ামী লীগ। এ ‘প্লাটিনাম জয়ন্তী’ উপলক্ষে ১০ দফা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
শনিবার (১ জুন) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী ২৩ জুন এ দেশের প্রাচীন ও বৃহত্তম রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘প্লাটিনাম জয়ন্তী’ উদযাপন করবে আওয়ামী লীগ। গত সাড়ে সাত দশক ধরে আওয়ামী লীগের পথচলা ছিল গৌরবোজ্জ্বল। সংগঠনটি বাঙালি জাতির অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে সফলতার মুকুটে সংযুক্ত করেছে একের পর এক পালক। যেকোনো রাজনৈতিক দলের জন্য এত দীর্ঘ সময় সফলতার সঙ্গে পথচলা মর্যাদা ও গৌরবের। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মতো ঐতিহ্যবাহী দলের ক্ষেত্রে তা আরও বেশি গুরুত্ব বহন করে। এ দেশের মানুষের মধ্যে জাতীয়তাবোধের বিকাশ ও আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংকল্প সুদৃঢ় হয়েছে আওয়ামী লীগের হাত ধরে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ এ দেশের গণমানুষের সংগঠন। এত দীর্ঘ পথচলার পরও আওয়ামী লীগ তার সাংগঠনিক শক্তিতে বলীয়ান। এ দেশের মানুষের ভালোবাসা ও আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেই আওয়ামী লীগ পথ চলেছে এবং ভবিষ্যতেও চলবে। আওয়ামী লীগ সুনির্দিষ্ট নীতি ও আদর্শকে ধারণ করে জনকল্যাণের রাজনীতিতে আত্মনিবেদিত থেকেছে বলেই সংগঠনটি জনগণের প্রাণের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রামের পথ ধরে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাসহ এ দেশের মানুষের যা কিছু মহৎ অর্জন তা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে। কালের বিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজ ডিজিটাল বাংলাদেশের পথ পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বাপ্নিক অভিযাত্রী আওয়ামী লীগ। দীর্ঘ সাফল্য-সংগ্রামের পথ ধরে সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে এবং তারই ধারাবাহিকতায় উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অভীষ্ঠে এগিয়ে যাচ্ছে।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের ‘প্লাটিনাম জয়ন্তী’ উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে ১০ দফা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
কর্মসূচিগুলো হলো-
১. ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ আয়োজন। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং নাগরিক সমাজ ও পেশাজীবীদের আমন্ত্রণ।
২. দলের সব সাংগঠনিক শাখায় বছরব্যাপী উপযোগী কর্মসূচি গ্রহণ ও তৃণমূলের কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের অংশগ্রহণ।
৩. রাজধানীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আনন্দ র্যালির আয়োজন। একইসঙ্গে সব দলীয় কার্যালয় ও স্থাপনায় আলোকসজ্জা, আনন্দ র্যালি, সভা-সমাবেশ, সেমিনার ও আলোচনা সভা আয়োজন।
৪. সারা দেশে এতিমখানা ও হাসপাতালে এবং কর্মজীবী, গরিব, অসহায় ও দুস্থদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ। ।
৫. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজন।
৬. ক্রোড়পত্র, বিশেষ স্মরণিকা ও গ্রন্থ প্রকাশ এবং পোস্টার, ব্যানার ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী। বিশেষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপযোগী পোস্টার, ব্যানার ও ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট প্রচার।
৭. বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন।
৮. ডকুমেন্টারি ও চিত্র প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন উপযোগী কর্মসূচি গ্রহণ।
৯. দলের সর্বস্তরের প্রবীণ নেতাদের সম্মাননা দেওয়া।
১০. প্লাটিনাম জয়ন্তী উপলক্ষে ‘সবুজ ধরিত্রী’ কর্মসূচি গ্রহণ।
এ লক্ষ্যে দেশের সর্বত্র জেলা/মহানগর, থানা/উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ। সারা দেশে সড়ক, মহাসড়কের দুপাশে ও সড়ক বিভাজনে এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণ, বাড়ির আঙিনা, নদী, খাল-বিল ও জলাশয়ের দুপাড়ে বৃক্ষরোপণ। একইভাবে মহানগরসহ সব শহরে ছাদে ও বেলকনিতে উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে বৃক্ষরোপণে নাগরিক সমাজকে পরিবেশ সম্পর্কে উদ্বুদ্ধকরণ এবং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জেলা/মহানগর, উপজেলা/থানা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডসহ সব শাখাসমূহে কর্মসূচি গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের জন্য সাংগঠনিক নির্দেশনা দিয়েছেন। একইসঙ্গে দেশে ও প্রবাসে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।