ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগে বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক বিসিসিআই বস সৌরভ গাঙ্গুলী বলেছিলেন, আজ ভারতের কাছে পাকিস্তান পাত্তা পাবে না। সৌরভের ক্যালকুলেশন করা সেই ভবিষ্যদ্বাণী ফলে গেলো। রোহিত বাহিনীর কাছে পাকিস্তান হারলো ছয় উইকেটে। টানা দুই জয়ে সেমির পথে পা বাড়ালো ভারত। আর মুশকিল হয়ে গেলো, এই ম্যাচ হেরে যে সমীকরণ দাঁড়ালো তাতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রাফি থেকে আয়োজকদের বিদায় ঘণ্টা বেজেই গেলো বলা যেতেই পারে। আর আবারও তা হলো ভারতের হাত ধরেই।
রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ২৪২ রান চেজ করতে নেমে হেসেখেলেই পাকিস্তানকে হারালো টিম ইন্ডিয়া। হাতে অবশিষ্ট ছিল ছয়টি উইকেট ও ৪৫ বল।
শুরুতে দুই ওপেনারের মধ্যে আক্রমণাত্মক ছিলেন কাপ্তান রোহিত। তবে বেশিক্ষণ মাঠে থাকা হয়নি তার। শাহীন আফ্রিদির একটি ইয়রকার ক্রস ব্যাটে ঘুরাতে গিয়ে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ততোক্ষণে ১৫ বলে করেন ২০ রান। এর মধ্যে একটি ছক্কা ও তিনটি বাউন্ডারি রয়েছে। সিঙ্গেল নিয়েছেন মাত্র দুটি।
এদিকে ওয়ানডে ব্যাটারদের র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে থাকা সুভমন গিল খেলে গেছেন স্বভাবসুলভ ইনিংস। তবে এই ম্যাচে ফিফটির কাছে গিয়েও দেখা পান নাই। আবরারের একটি লেগিতে একেবারে ভ্যাবাচ্যাগা খেয়ে যান তিনি। বলটি গিয়ে উপড়ে দেয় মিডল স্ট্যাম্প। চলতি টুর্নামেন্টে ওই বলটিকে এখন পর্যন্ত ‘টুর্নামেন্ট সেরা’ বল হচ্ছে। গিল ৫২ বলে খেলে ৪৬ রানের ইনিংস।
এদিকে ধীরে ধীরে আরেক কীর্তি গড়ছিলেন বিরাট কোহলি। মূলত শ্রেয়াস আইয়ারকে নিয়ে জয়ের বাকি কাজটা তিনিই সারেন। শ্রেয়সও (৫৬) এদিন ফিফটি তুলে নিয়েছেন।
ভারতের জয় যখন সময়ের ব্যাপার মাত্র, তখন ঘটে আরেক অস্বস্তি। কোহলি তার ৫১ তম সেঞ্চুরি থেকে আর মাত্র কিছু রান দূরে। শ্রেয়সের (৫৬) প্যাভিলিয়নের ফেরতের পর হার্দিক এসেই পেয়ে যান বাউন্ডারির দেখা। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেন নাই। এটা হয়তো কোহলির জন্যই সুখকর হয়েছে!
ভারতের ম্যাচ জিততে যখন আর দুই রান প্রয়োজন, তখন কোহলির ব্যক্তিগত সংগ্রহ ৯৬। এদিকে ড্রেসিংরুম থেকে কাপ্তান হাতের ইশরায় বলে চলেছেন, হাঁকিয়ে দাও’। সেটি কোহলির নজরে এসেছে কি না তা জানা না গেলেও এমন পরিস্থিতিতে দর্শকদের হতাশ করেন নাই এই ডানহাতি। খুশদিল শাহর অফ স্ট্যাম্পের বাইরের একটি ডেলিভারি মিডঅফ দিয়ে সজোরে হাঁকালে প্রথমে উদযাপনে মাতে পুরো গ্যালারি, পরে কোহলি নিজেও। তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৫১তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ভারত জয় পেয়ে যায় ছয় উইকেটে।
পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে শাহীন আফ্রিদি সবচেয়ে বেশি পিটুনি খেলেও তুলে নিয়েছেন দুইটি উইকেট। আর আবরার আহমেদ ও খুশদিল শাহ নিয়েছেন একটি করে।
পয়েন্ট টেবিল বলছে, সেমিতে উঠতে হলে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের জিততে তো হবেই, সঙ্গে নিউজিল্যান্ডেরও হারতে হবে ভারত ও বাংলাদেশের কাছে। এর ব্যতিক্রম হলে, ওই যে গলায় ঘণ্টা তো বাঁধাই আছে।



