মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১৬০০ ছাড়িয়ে গেছে। মিয়ানমারের জান্তা সরকার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানিয়েছে, উদ্ধারকারীরা ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিতদের উদ্ধারে মরিয়া অনুসন্ধান চালাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে।
সামরিক সরকারের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রোববার সকাল পর্যন্ত ১,৬৪৪ জন নিহত এবং ৩,৪০০ জনেরও বেশি আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের পর কমপক্ষে ১৩৯ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারী সরঞ্জামের অভাবে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। মান্দালয়ের একটি উদ্ধারকারী দল জানিয়েছে, তারা খালি হাতে একটু একটু করে কংক্রিটের স্তূপ সরিয়ে মানুষদের বের করছে। অতি দ্রুত আটকে পড়াদের উদ্ধার সম্ভব না হলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্যমতে, শুক্রবার (২৮ মার্চ) স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর কেন্দ্র ছিল দেশটির মান্দালয় শহর থেকে প্রায় ১৭.২ কিলোমিটার দূরে এবং ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। প্রথম কম্পনের ১২ মিনিট পর ৬ দশমিক ৪ মাত্রার আফটার শক হয়। ভূমিকম্পের পর রাজধানী নেপিডো, মান্দালয়, সাইগাইংসহ ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করেছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। বিশ্ব সম্প্রদায়ের সাহায্য চেয়েছে জান্তা সরকার।
এদিকে মিয়ানমারে ভূমিকম্পে কেঁপেছে থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, দক্ষিণ-পশ্চিম চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, লাওস ও কম্বোডিয়া। এর মধ্যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে থাইল্যান্ডে। ধসে পড়া ভবনের নিচে চাপা পড়েছে বহু মানুষ।
প্রসঙ্গত, বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের সাবেক গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির ভাগ্যে কী ঘটেছে তা জানতে উদ্গ্রীব তার সমর্থকরা।
অং সান সু চি ২০২১ সালে এক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে আটক রয়েছেন। মিয়ানমারের প্রাক্তন এ নেত্রী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হননি। রাজধানী নেপিদওয়ের কারাগারে তিনি বন্দিবস্থায় সুস্থ রয়েছেন। কারা কর্তৃপক্ষের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বার্মিজ সার্ভিসকে এ তথ্য জানিয়েছে।