বাজেটে অর্থনৈতিক রূপান্তরের যে আকাঙ্খা তার পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেনি বলে মনে করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, কর আরোপের ক্ষেত্রে বরাবরের মতোই গরিবদের ওপর বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে, শীর্ষ ধনীদের কাছ থেকে অধিকতর কর আরোপের ক্ষেত্রে কোনো লক্ষ্য রাখা হয়নি। এছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা লাভবান হবে এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলেও জানানো হয় দলের পক্ষ থেকে।
এই বাজেট থেকে যে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে বা বেকারত্ব দূর হবে তা নিয়ে শঙ্কায় জাতীয় নাগরিক পার্টি। মঙ্গলবার (৩ জুন) এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ বলেন, সরকার বর্তমান সময়ের অর্থনীতির সমস্যাগুলো অ্যাড্রেস করতে পেরেছে। কিন্তু তার প্রোপার সলিউশন বা স্ট্র্যাটেজি বা যেই বৈষম্যহীন ভিশনের কথা আমরা বলছি, এক বছরের জন্য বাজেট হলেও বাস্তবভিত্তিক, নতুন বন্দোবস্তের যে আকাঙ্ক্ষা, অর্থনৈতিক রূপান্তরের আকাঙ্ক্ষার-এগুলোর পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেনি বলে আমরা মনে করি।
তিনি আরও বলেন, আগের যে অর্থনীতির কাঠামো, যে লুটপাটের অর্থনীতি এবং ঋণগ্রস্ত অবস্থা ছিল সেই অর্থনীতির বাস্তবতায় সরকারকে পরিচালিত হতে হচ্ছে এবং বাজেট উপস্থাপন করতে হয়েছে। আগের অর্থনীতির কাঠামোর অনেক ছাপ এই বাজেটের মধ্যে দেখা যাচ্ছে।
ব্যাংকের ওপর যে নির্ভরশীলতা তা আগের মতোই আছে বলে মনে করছে এনসিপি। এছাড়া শিক্ষা খাতে কোনো পরিবর্তন নেই স্বাস্থ্য খাতেও বাজেট বাড়েনি। ডিজিটাল ইকোনোমির ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, কর্মসংস্থানের আন্দোলন থেকেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সূত্রপাত। ফলে তরুণদের ব্যাপকভাবে প্রত্যাশা বেকার সমস্যার সমাধান এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর উদ্যোগ থাকবে। কিন্তু সেটি আমরা দেখতে পাইনি। গত এক বছরে ২৬ লাখ বেকার বেড়েছে। কর্মসংস্থান বাড়াতে যে ধরনের বিনিয়োগ বাড়ানোর দরকার ছিল সেরকম কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীলতা অব্যাহত রয়েছে। আগের আমলের মতোই ধারাবাহিকতা রয়েছে।
কর আরোপের ক্ষেত্রেও গরিবদের ওপড় বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে বলে মনে করছে দলটির আহ্বায়ক।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তৈরি হওয়া নতুন বাংলাদেশে আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল ধনী-গরিবের আয় বৈষম্য কমে আসবে। কিন্তু এই বাজেটে আমরা আয় বৈষম্য কমানোর কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখিনি। করদাতার সংখ্যা যেটি আগে ছিল, সেটিই বিদ্যমান। যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর ফাঁকি দেন, তাদের করের আওতায় আনার কার্যকর কোনো উদ্যোগ আমরা দেখিনি। ফলে নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্তের ওপর যে করের চাপ ছিল সেটি অব্যাহত থাকবে।
দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, বড় বড় রাঘব বোয়ালদের করের আওতায় এনে জবাবদিহিতা নিশ্চিতের কোন সুযোগ রাখা হয়নি এবারের বাজেটে।
এদিকে বাজেটে কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ রাখা হয়েছে তা উচিত হয়নি বলেও মন্তব্য করেন দলটির নেতারা। তবে জুলাই যোদ্ধাদের বরাদ্দ দেয়া বাজেটকে সাধুবাদ জানিয়ে নাহিদ বলেন, সেটি সঠিকভাবে বণ্টন করতে হবে।