মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজপথই সমাধান দেখছে বিএনপি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সর্বশেষ বৈঠকেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ বিষয়ে আশ্বাস না পাওয়ায় রাজপথই সমাধান দেখছে দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। ‘এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে’ প্রধান উপদেষ্টার এ বক্তব্যে আস্থা নেই দলটির।

সরকারের ওপর আস্থাহীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্যে। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। সরকারের ওপর চাপ বাড়িয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ আদায় করতে চাইছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনাও সাজাচ্ছে।

তবে, এসব কর্মসূচি ঘিরে সংঘাত ও সহিংসতা সৃষ্টি করে তৃতীয় পক্ষ বিশেষ করে আওয়ামী লীগ যেন কোনো ধরনের সুযোগ নিতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবে বিএনপি।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রলম্বিত করার চেষ্টা চলছে বলে সন্দেহ করছে বিএনপি। গণপরিষদ নির্বাচন, নতুন সংবিধান, সেকেন্ড রিপাবলিক ও জুলাই ঘোষণাপত্র ঘিরে সময়ক্ষেপণের আয়োজন করা হচ্ছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ‘নির্বাচন প্রলম্বিত করার’ আয়োজন হিসেবে দেখছেন সিনিয়র নেতারা। বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। এভাবে চলতে থাকলে সেটি ধীরে ধীরে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে তারা রাজপথের আন্দোলনে নামবেন। আন্দোলনের মাঝে সংঘাত হলে তৃতীয় কোনো পক্ষ এর সুযোগ নিতে পারে। চুপচাপ বসে থাকলে পরিস্থিতি তাদের হাতছাড়াও হয়ে যাবে।

সূত্র জানায়, রাডম্যাপ ঘোষণার দাবিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ২৪ মে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। নির্বাচন ডিসেম্বরে না হলেও জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারির মধ্যে হবে এমন আশ্বাসও সরকারের পক্ষ থেকে আসেনি। বৈঠকে আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

তারা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের পর উপদেষ্টা পরিষদ যে বক্তব্য দিয়েছে তা অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর। দলকে সাংগঠকিভাবে শক্তিশালী করার পাশাপাশি নির্বাচনি প্রস্তুতির লক্ষ্যে ঈদের পর রাজপথে নতুনভাবে মাঠে থাকবে বিএনপি। এসব কর্মসূচি থেকে নির্বাচনি রোডম্যাপ আদায়ের জোড়ালো বক্তব্য থাকবে।

দলটির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের একাংশ ক্ষমতায় থাকতে নানা অজুহাতে জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই চেষ্টা সফল হলে দীর্ঘমেয়াদে দেশের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়বে। পতিত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের সুযোগ করে দেবে। এমন শঙ্কা থেকে মুক্তিযুদ্ধ এবং জুলাই আন্দোলনের স্পিরিট ধারণ করে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ বাড়িয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ আদায়ের দাবিতে রাজপথে নামার চিন্তা করছে।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ৫ আগস্ট হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে না গেলে নিয়মানুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতো। নির্বাচন কমিশনও প্রস্তুত, তাহলে কীসের প্রস্তুতির জন্য অপেক্ষা করছি? ১৭ বছর দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে জনগণ যদি তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারে, তা হলে আবার রাজপথে নামবে। আমাদের ওপর জনগণ সেই চাপ দিয়ে যাচ্ছে। মানুষ প্রশ্ন শুরু করছে, বিএনপি কী করবে?

বিএনপির দলীয় সূত্র মতে, জুলাই আন্দোলনের ফসল বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। এ সরকার ব্যর্থ হলে অথবা দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা না করলে গণতন্ত্র বড় ধরনের হুমকিতে পড়বে। সরকারের একটি প্রভাবশালী অংশ বিরাজনীতিকরণ বা তাদের মদদপুষ্ট কোনো একটি কিংস পার্টিকে প্রতিষ্ঠিত করতে নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাইছে। এই চেষ্টা যেন সফল না হয়, সে জন্য করণীয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। সেখানে নেতারা নির্বাচনের দিনক্ষণের দাবিতে আন্দোলনের পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে, সেই আন্দোলন কোনো অবস্থায় যেন সংঘাতের দিকে না যায়, সে ধরনের কর্মসূচি নেওয়ার পক্ষে মতামত এসেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আগে এনসিপি, জামায়াত, হেফাজতসহ কয়েকটি সংগঠনের কয়েক হাজার নেতা-কর্মীর প্রথমে যমুনার সামনে এবং পরে শাহবাগে অবস্থান নিলে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। একই পদ্ধতিতে বিএনপি ও তার মিত্ররা নিজ নিজ অবস্থান থেকে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার দাবিতে কর্মসূচি দিতে পারে। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনাকে কেন্দ্র করে শাহবাগ, বাংলামোটর, মগবাজার, মালিবাগ, শান্তিনগর, মৎস্য ভবন সড়কে অবস্থান নেওয়া হয়, সরকার তখন কী করবে? অবশ্যই তারা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপি এখনো ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব।

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে এ-ও বলেছি, যদি সময়মতো নির্বাচনের ঘোষণা না পাই, তাহলে প্রয়োজনে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।’

Facebook
X
WhatsApp
Email
Telegram
সর্বশেষ
ফেসবুক নেটওয়ার্ক ও পার্টনার পেজ
মিডিয়া
Cover for Table Talk Uk
595,824
Table Talk Uk

Table Talk Uk

Table Talk UK Discusses the political and social issues of the country. Our only purpose is to expose social inconsistencies and politics in the face of accountability on the path to democracy and talk about the rights of people.

This message is only visible to admins.
Problem displaying Facebook posts. Backup cache in use.
PPCA Error: Due to Facebook API changes it is no longer possible to display a feed from a Facebook Page you are not an admin of. The Facebook feed below is not using a valid Access Token for this Facebook page and so has stopped updating.

Smash Balloon Custom Facebook Feed WordPress Plugin The Custom Facebook Feed plugin

সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
কপিরাইট © 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত — লন্ডন মিরর।
সম্পাদক: হাসিনা আক্তার
সার্চ করুন
লগইন/সাইন আপ
সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!