প্রবীণ অভিনেতা প্রবীর মিত্র মারা গেছেন। তার ছেলে জানিয়েছে, রোববার (৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালটির আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন গুণী এই অভিনেতা। ফুসফুসের সমস্যা ও অক্সিজেন স্বল্পতাসহ বেশ কিছু কারণে সম্প্রতি তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।
১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৬৮ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথম প্রবীর মিত্র ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
১৯৭৩ সালে প্রবীর মিত্র আলোচনায় আসেন ওপার বাংলার খ্যাতিমান নির্মাতা ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় অভিনয় করে। তার তেজোদ্দীপ্ত লুক ছিল এই সিনেমায়। তার বিপরীতে ছিলেন সে সময়ের প্রথম সারির নায়িকা কবরী।
১৯৮৯ সালে ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন প্রবীর মিত্র। তার বিপরীতে ছিলেন জিনাত এবং অঞ্জু ঘোষ। এই সিনেমায় প্রবীর মিত্রের অভিনয় নজর কাড়ে দর্শকদের।
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে প্রবীর মিত্র ‘নায়ক’ হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এরপর চরিত্রাভিনেতা হিসেবে কাজ করেও তিনি পেয়েছেন দর্শকপ্রিয়তা। ‘সেয়ানা’, ‘চরিত্রহীন’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘মধুমিতা’, সাহেব, চাষীর মেয়ে, বেদের মেয়ে জোসনা, বড় ভালো লোক ছিল, জন্ম থেকে জ্বলছি, চ্যালেঞ্জ, তিন কন্যা, নয়নের আলো, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘ঝিনুক মালা; ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’, প্রিয়া আমার প্রিয়া’ সহ চার শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
‘বড় ভালো লোক ছিল’ সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন প্রবীর মিত্র। এ ছবিতে ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুশ’ গানটিতে প্রবীর মিত্রের অভিনয়ই সবচেয়ে ফোকাসে ছিল। আর এই ছবিতেই তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান ১৯৮২ সালে।
প্রবীর মিত্র বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অবধারিত একটি নাম। তার অভিনীত চলচ্চিত্র এবং দীর্ঘ ক্যারিয়ারের সাধনা অনেকের জন্য আদর্শ হয়ে থাকবে।