ঢাকাই চলচ্চিত্র ও টিভি অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমু হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন তার স্বামী শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তার বন্ধু ফরহাদ। তারা দুইজন মিলে শিমুকে হত্যা করেছেন বলে আদালতে স্বীকার করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারা এ জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর।
সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনোয়ারুল কবীর বাবুল জানান, বৃহস্পতিবার আসামিদের রিমান্ড চলাকালে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এ সময় আসামিরা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি দিতে চাইলে তা রেকর্ড করার আবেদন করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে উল্লেখ করে হুমায়ুন কবীর জানান, শিমুকে নোবেল একা শ্বাসরোধ করেননি। এ সময় ঘটনাস্থলে ফরহাদ উপস্থিত ছিলেন। তারা দুজনে মিলেই হত্যা করেছে।
হুমায়ন কবীর বলেন, ফরহাদ নোবেলের বাল্যবন্ধু। তিনি ঢাকায় একটি মেসে থাকেন। তার তেমন উপার্জন নেই। তিনি মাঝে মধ্যেই নোবেলের বাসায় আসেন, তারা খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তিনি সপ্তাহে অন্তত দু’তিন দিন সকালবেলা নোবেলের বাসায় এসে আর্থিক সাহায্য নিতেন। ঘটনার দিনও তিনি সকালে নোবেলের বাসায় যান এবং পরে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নোবেল একসময় নেশায় আসক্ত ছিলেন। এখন তিনি কিডনি ও লিভারের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন। ফলে শারীরিকভাবে তিনি অনেকটাই দুর্বল। রোববার সকালে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হলে শিমুকে একা কাবু করতে পারছিলেন না নোবেল। তখন ফরহাদ বন্ধুর পক্ষ নেন। একপর্যায়ে শ্বাসরোধে শিমুর মৃত্যু হয়।
পুলিশ বলছে, রবিবার সকাল সাতটা থেকে আটটার মধ্যে গ্রিনরোডের বাড়িতে শিমুকে হত্যা করা হয়। পরে নোবেল ও ফরহাদ দুটো বস্তায় শিমুর শরীরের দুপাশ মুড়িয়ে মাঝ বরাবর প্লাস্টিকের সুতা দিয়ে সেলাই করেন। এরপর বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করে দিয়ে বাড়ির দারোয়ানকে নাশতা আনতে বাইরে পাঠিয়ে বস্তাটি নিচে রাখা নোবেলের গাড়ির পেছনে তোলেন। ওইদিন সকালে তারা লাশ নিয়ে মিরপুরের দিকে যান। কিন্তু সেখানে লাশ ফেলার জায়গা না পেয়ে আবারও ফিরে আসেন। পরে তারা রাতে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশে ঝোপের ভেতরে ফেলে আসেন।