বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আহাদুল ইসলাম নামে একজনকে ‘গুলি ও মারধরের মাধ্যমে হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগে খিলগাঁও থানায় করা মামলায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্নাকে আগাম জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জামিনের আবেদন করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) আহাদুলের বাবা মো. বাকের বাদি হয়ে মামলাটি দায়ে করেন। এতে পান্নার নাম রয়েছে ৯৪ নম্বরে।
জেডআই খান পান্নার আইনজীবী আহসানুল করীম বলেন, অতি উৎসাহী হয়ে সুপরিচিত আইনজীবী জেডআই খানের বিরুদ্ধে বাদি মামলা করেছেন। জেডআই খান পান্না সব সময় স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। মিথ্যা মামলা সত্য ঘটনাকে দুর্বল করে দেয় বলেন মন্তব্য করে তার আইনজীবী।
অ্যাড. জেডআই খান পান্না বলেন, আমি রাজনীতির শিকার হয়েছি। বাদি নিজেই আমাকে চেনে না। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের ওপর কোনো আঘাত এলে তা সহ্য করবো না।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই আহাদুলসহ অন্যরা মেরাদিয়া বাজারের কাছে বিক্ষোভ করছিলেন। তখন নাম না জানা বিজিবি, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ অন্য আসামিদের নির্দেশে গুলি চালায়। এ সময় আহাদুল গুলিবিদ্ধ হন। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে থাকা আসামিরা তাকে মারধরও করে। মামলায় বিজিবির বর্তমান মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীকেও আসামি করা হয়েছে।
এদিকে মামলায় ৯৪ নম্বরে নাম থাকায় এ নিয়ে রসকিতা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং মানবাধিকার সংস্থা আইন ও শালিস কেন্দ্রের এই চেয়ারপার্সন।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি রসিকতা করে বলেন, ‘মামলা দিলে এক নম্বর আসামি করে দেবেন, ১৮০ জন আসামির মধ্যে ৯৪ নম্বরে কেন আমার নাম দিলেন? আমি এটা নিয়ে অসন্তুষ্ট।’
শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাজশাহী বিজিবি সেক্টর সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছিলেন, যারা হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যারা নিরীহ লোকের বিরুদ্ধে মামলা করছে কিংবা টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য মামলার ভয়ভীতি দেখাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত অ্যাকশন নেওয়া হবে।
জেড আই খান পান্না সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘রিসেট বাটন’ মন্তব্যের বিষয়ে এবং হত্যার অভিযোগে দায়ের করা বিভিন্ন মামলা নিয়ে সমালোচনা করেন । তিনি বলেছেন, এই মামলার উদ্দেশ্য মানুষকে হয়রানি করা। এতে করে ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে।