ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ দাবানলের ক্ষত না সারতেই নতুন আরেকটি দাবানল হানা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে।গতকাল বুধবার নতুন দাবানলটি দ্রুত শহরটির উত্তরাঞ্চলে ৯ হাজার ৪০০ একর (৩৮ বর্গ কিলোমিটার) এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এতে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেস শহর থেকে প্রায় ৫০ মাইল (৮০ কিলোমিটার) উত্তরে এই দাবানল ছড়িয়ে পড়ছে। প্রবল বাতাস ও শুকনো ঝোপঝাড়ের কারণে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে আগুন।
উত্তরে ‘হিউজ ফায়ার’ নামে পরিচিত এই আগুন ইতোমধ্যেই অঞ্চলটির দমকল বাহিনীর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে। তবে ইতোমধ্যে মেট্রোপলিটন এলাকায় জ্বলতে থাকা দুটি বড় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে দমকল কর্মীরা।
রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন এই আগুন অতি সাম্প্রতিক ‘ইটন ফায়ারে’র অর্ধেক আকার ধারণ করে। ‘ইটন ফায়ার’ এই মাসের শুরুর দিকে লস অ্যাঞ্জেলস অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া সবচেয়ে ভয়াবহ দুটি দাবানলের একটি।
নতুন দাবানলে ক্যাস্টেইক লেক এলাকার বাসিন্দাদের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে বলে সতর্ক করেছে লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার বেশিরভাগ অংশে এখনো প্রবল বাতাসের কারণে দাবানলের চরম ঝুঁকি থাকায় জরুরি সতর্কতা অবস্থা বহাল রয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি শেরিফ রবার্ট লুনা জানিয়েছেন, প্রায় ৩১ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। আরও ২৩ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি, ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য এবং মার্কিন বন পরিষেবা তাদের দমকল কর্মীদের আগুন নিয়ন্ত্রণে পাঠিয়েছে। এদিকে অ্যাঞ্জেলেস ন্যাশনাল ফরেস্ট বিভাগ জানিয়েছে, তাদের ৭ লাখ একর (২ হাজার ৮০০ বর্গকিলোমিটার) বন সম্পূর্ণভাবে দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়া বন ও অগ্নি সুরক্ষা বিভাগ (ক্যাল ফায়ার) জানিয়েছে, জরুরি অবস্থা বিবেচনায় আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার বিভিন্ন স্থানে এক হাজার ১০০ জন দমকলকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় গত ৯ মাসে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় দাবানলে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। তবে আগামী শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আসলেই বৃষ্টি হলে দমকলকর্মীরা কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে।