আন্দোলনকারীরা ‘রাজাকার’ দাবি করে মিছিলের পরিপ্রেক্ষিতে এক ফেসবুকে পোস্টে তাদের দেশ ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
রোববার মধ্যরাতে হঠাৎ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে স্লোগান সহকারে বের হয় মিছিল। এসময় তারা নিজেদের ‘রাজাকার’ পরিচয় দিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
এরপর প্রতিমন্ত্রী পলক এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫ মার্চ ছাত্র শিক্ষকদের করেছে রাজাকাররা, সেই রাজাকারের পক্ষে রাজাকারের সন্তান বলে স্লোগান দিতে লজ্জা করে না?
অপর আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন, ‘তুমি কে? আমি কে? বাঙালি, বাঙালি’, ‘তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’ স্লোগান লিখে পোস্ট দেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন এ সংক্রান্ত একটি পোস্টারও।
সবশেষ রোববার দিবাগত রাত সোয়া একটায় ফেসবুক আরেকটি পোস্ট দেন প্রতিমন্ত্রী পলক। লিখেন, ‘একাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার, তোরা যারা রাজাকার এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়।’
এদিকে প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও রাত থেকেই সোস্যালে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন নেটিজেনরা। তারা বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে লেখেন, কোনো ইস্যুতে আন্দোলন হতেই পারে। কিন্তু তার মানে এই যে, একাত্তরে যারা ইতিহাসের জঘন্যতম মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল তাদের লেবাস গায়ে মেখে রাস্তায় নামতে হবে! বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে, ‘আমি কে, রাজাকার’ এই স্লোগানটি খুব বেশি সমালোচিত হতে দেখা গেছে।
নেটিজেনরা বলেন, এই রাজাকাররাই বাঙালি নারীদের ‘গনিমতের মাল’ আখ্যা দিয়ে গণধর্ষণকে বৈধতা দিয়েছিল। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে এসে সেই রাজাকারের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছে এই নারীরা!
সংবাদমাধ্যমগুলোতে দেয়া সাক্ষাতকারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনেকে বলেছে কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের প্রতিবাদে তারা মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেছে।
চীন সফর উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার বলেন, কোটা নিয়ে আদালত থেকে সমাধান না আসেলে সরকারের কিছু করার নেই।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে? একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বিপক্ষে কথা বলার অধিকার তাদের কে দিয়েছে?