বর্তমান বিশ্ব আস্থা ও বিশ্বাসের ঘাটতিতে ভুগছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনিবার জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
জি-২০ চেয়ারম্যান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সভাপতির ভাষণে বলেন, করোনা-পরবর্তী বিশ্ব আস্থা ও বিশ্বাসের ঘাটতিতে ভুগছে। ইউক্রেন যুদ্ধ এটিকে আরও গভীর করেছে। তাই, গোটা বিশ্বের মঙ্গলের জন্যই সবাইকে একসাথে চলতে হবে। এই বিশ্বাসহীনতাকে একে অপরের প্রতি আস্থায় পরিণত করার জন্য গোটা বিশ্বের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার সময় সবার মানবকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা উচিত। এসময়, মরোক্কয় ভূমিকম্পে নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানান মোদি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, আমরা এমন এক সময়ে বাস করছি, যখন বহু আগের পুরনো সমস্যাগুলো উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছে। কারণ বর্তমান বিশ্ব আস্থা ও বিশ্বাসের ঘাটতিতে ভুগছে। তাই, মানবকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। এ জন্য ‘সবার সাথে, সবার বিকাশ, সবার বিশ্বাস এবং সবার প্রয়াস’ ধারণাটি বিশ্বের জন্য একটি পথপ্রদর্শক হতে পারে।
বিশ্বের শিল্পোন্নত ও বিকাশমান অর্থনীতির জোট জি-২০-এর শীর্ষ সম্মেলন শনিবার ভারতের দিল্লিতে শুরু হয়েছে। ‘ভারত মণ্ডপমে’ স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ শুরু হয় এ শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম সেশন—‘ওয়ান আর্থ’ বা ‘এক বিশ্ব’। দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলন রোববার শেষ হবে।
শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠকশেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠক
শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে: মোদিশেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে: মোদি
ছবিতে নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে শেখ হাসিনাছবিতে নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে শেখ হাসিনা
সম্মেলনে এরই মধ্যে যোগ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়ল, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তায়িপ এরদোয়ান, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাসহ অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রনেতারা।
জি-২০ গোষ্ঠীর সদস্য না হলেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু বাংলাদেশকেই ওই সম্মেলনে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছে আয়োজক ভারত। জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় মোদির সরকারি বাসভবনে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তিনি।
শনিবার জি-২০ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় সম্মেলনস্থলে পৌঁছানোর পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মোদিকে হাত মেলাতে দেখা যায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের দুটি অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন। বর্তমান সরকারের মেয়াদে বিভিন্ন আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের অভিজ্ঞতা অংশগ্রহণকারী বিশ্বনেতাদের কাছে তুলে ধরবেন তিনি।
নয়াদিল্লিতে পৌঁছেছেন জো বাইডেননয়াদিল্লিতে পৌঁছেছেন জো বাইডেন
মোদি-হাসিনা বৈঠক, তিন সমঝোতা স্মারক সইমোদি-হাসিনা বৈঠক, তিন সমঝোতা স্মারক সই
জি-২০ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাজি-২০ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
দুপুরে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদ, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো অ্যাঞ্জেল ফার্নান্দেজ, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়ল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
এবারই প্রথমবারের মতো জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করছে ভারত। সম্মেলন উপলক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে দেশটি। জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।