এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ইঞ্জিন বিস্ফোরণ থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস ও কোস্ট গার্ড। একই কথা বলছেন ঝালকাঠির জেলা প্রশাসকও। তবে কী কারণে ইঞ্জিন বিস্ফোরিত হলো সে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। এদিকে ঘটনার পর থেকেই লঞ্চের একজন স্টাফকেও পাওয়া যাচ্ছে না।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একাধিক যাত্রী ও তাদের স্বজনরা বলেন, ‘ইঞ্জিন রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। সেখান থেকে আগুন বের হয়ে ওপরে চলে আসার পর তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ সময় আগুনের সঙ্গে অনেক ধোঁয়া থাকায় কোনও কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল আমরা সবাই মারা যাচ্ছি। এই ভেবে অনেকেই নদীতে লাফ দেন।’
তারা আরও বলেন, ‘ইঞ্জিন রুমের সঙ্গে ছিল খাবারের হোটেল। সেখানে বড় বড় গ্যাস সিলিন্ডার ছিল। এ ছাড়া চায়ের দোকানেও ছিল গ্যাস সিলিন্ডার। যা আগুনের তাপে বিস্ফোরিত হলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আমরা যারা বেঁচে আছি তা আল্লাহর অশেষ কৃপায়। এ ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নিচতলার ডেকের যাত্রীরা।’
এ ব্যাপারে বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক কামাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘পাঁচটি ইউনিট কাজ করে দ্রুততার সেঙ্গ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর লঞ্চের ভেতর থেকে লাশ উদ্ধার করে ঝালকাঠি হাসপাতালের পাঠানো হয়। একাধিক যাত্রীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ইঞ্জিন রুম থেকেই আগুনের সূত্রপাত। প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী বলতে পারি, ইঞ্জিন বিস্ফোরিত হয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে কী কারণে ইঞ্জিন বিস্ফোরণ হলো তা খতিয়ে না দেখে বলা সম্ভব নয়। এখন এ বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
কোস্টগার্ডের বরিশাল অঞ্চলের স্টেশন অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আহমেদ অনাবিলও একই কথা বলেন, ‘লঞ্চের ইঞ্জিন বিস্ফোরণ থেকেই এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। কেন ইঞ্জিন বিস্ফোরণ হলো তা আমাদেরও প্রশ্ন। এ প্রশ্নে উত্তরের পেতে হলে অবশ্যই আমাদের সময় দিতে হবে।’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত ৩টায় ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় সুগন্ধা নদীর পোনাবালীয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের ইঞ্জিন রুম থেকে আগুন লাগে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া অগ্মিদগ্ধ হয়ে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭০ জন। ঢাকায় পাঠানো হয়েছে ১৬ জনকে।