আন্তর্জাতিক পুলিশি সংস্থাটি- ইন্টারপোলের ‘রেড অ্যালার্ট’ বা লাল তালিকায় বাংলাদেশের ৬৩ জন নাগরিক রয়েছে। শুক্রবার সংস্থাটির ওয়েবসাইট থেকে এই তথ্য জানা গেছে। সাম্প্রতিক সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হলেও ইন্টারপোলের তালিকায় তার নাম নেই।
ইন্টারপোলের ওয়েবসাইট জানাচ্ছে, ৬৩ জন বাংলাদেশি নাগরিককে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কর্তৃপক্ষ খুঁজছে। এসব অভিযোগের মধ্যে, খুন, হত্যাকাণ্ড, যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতন থেকে শুরু করে অর্থ আত্মসাতের অপরাধও রয়েছে। কিছু দিন পরপর ইন্টারপোল এই তালিকা হালনাগাদ করে।
যৌন নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগে জাহিদুল ইসলাম ও অস্ত্র মামলায় ফজলুল আমীন জাভেদকে খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র। খুনের অভিযোগে লক্ষ্মীপুরের খোরশেদ আলমকে খুঁজছে ইউরোপের দেশ বেলজিয়াম। আবার, আফ্রিকার দেশ ইসতাওয়ানি খুনের অভিযোগে খুঁজছে ঢাকার মো. মিলন ও লিটন ব্যাপারীকে।
খুনের অভিযোগে নোয়াখালীর মিজান মিয়াকে খুঁজছে দক্ষিণ আফ্রিকা। চাঁদুপর সদরের রাজু ঢালীকে খুনের অভিযোগ দায়ের করা এক মামলায় খুঁজছে সিঙ্গাপুর। মুদ্রা জালিয়াতির অভিযোগে খুলনার আজিজুর রহমান, অজয় বিশ্বাস ও তরিকুল ইসলাম, নোয়াখালীর সবুজ, গোপালগঞ্জের আব্দুল আলীম শরীফ, নারায়ণগঞ্জের মনির ভুইয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শফিকুলকে খুঁজছে ভারত।
চোরাচালানির অভিযোগে নাটোরের সিরাজ মোস্তফাকে এবং খুনের অভিযোগে ফেনীর আলা উদ্দিনকে খুঁজছে মালয়েশিয়া। তছরুপের অভিযোগে হানিফকে খুঁজকে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্র মালদ্বীপ।
অন্যদিকে হত্যার অভিযোগের মামলায় গাজীপুরের নুরুল ও মজনু, কুমিল্লার খন্দকার আব্দুর রশীদ ও রাশেদ চৌধুরী, ঢাকার নুর চৌধুরী, নবী হোসাইন, তানভীর ইসলাম জয়, বাগেরহাটের রবিউল ইসলাম, টাঙ্গাইলের মোহাম্মদ তাজউদ্দীন ও বাবু আহমেদ রাতুল, চট্টগ্রামের ইউসুফ ও সাজ্জাদ হোসেনকে খুঁছে ঢাকা।
এই তালিকায় আরও আছেন ফরিদপুরের নাইম খান, নাজমুল আনসার, শরীফুল হক ডালিম, বগুড়ার কালা জাহাঙ্গীর, জিসান আহমেদ, তৌফিক আলম, প্রকাশ কুমার, জাফর আহমেদ, সালাউদ্দিন মিন্টু, খুলনার শরীফুল হোসাইন, চট্টগ্রামের আমিনুর রসুল,নেত্রকোনার আব্দুল জাব্বার।
বরিশালের গোলাম ফারুক অভি, সুব্রত বাইন, মুন্সীগঞ্জের রফিকুল ইসলাম, খুলনার হারুন শেখ ও সুলতান, নরসিংদীর মোসলেম উদ্দিন খান এবং খুনসহ বিভিন্ন অভিযোগে গাইবান্ধার চন্দন কুমার রায়, জাহিদ হোসেন খোকন, সৈয়দ হাছান আলী, আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল জব্বার ও সৈয়দ হোসেনকে খুঁজছে ঢাকা।
এ ছাড়া মানবপাচারের অভিযোগে খুঁজছে কিশোরগঞ্জের জাফর ইকবাল, স্বপন, মিন্টু মিয়া ও তানজীরুল, মাদারীপুরের মোল্লা নজরুল ইসলাম। পর্নোগ্রাফির অভিযোগে টাঙ্গাইলের ওয়াসিম, অস্ত্র মামলায় গিয়াস উদ্দিন, নির্যাতনের মামলায় চট্টগ্রামের অশোক কুমার দাশ, জালিয়াতির অভিযোগে জামালপুরের আমানুল্লাহ এবং আতাউর রহমানকে খুঁজছে বাংলাদেশ।
প্রসঙ্গত, ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইন্টারপোল। পুলিশি সংস্থাটির সদস্য বিশ্বের ১৯৬টি দেশ। ইন্টারপোল বিশ্বকে নিরাপদ রাখতে পুলিশ এবং অপরাধ বিশেষজ্ঞদের একটি নেটওয়ার্কে সংযুক্ত ও সমন্বয় করে। একটি দেশের আসামি অপরাধ করে অন্য দেশে চলে গেলে, সেই আসামি ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা লাগে।
এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশকে সন্দেহভাজন অপরাধীর যাবতীয় তথ্য দিয়ে রেড নোটিশ জারির জন্য ইন্টারপোল সদর দপ্তরে আবেদন করতে হয়। আবেদনের পর ওই অভিযুক্তের অপরাধ বিষয়ক যাবতীয় কাগজপত্র, মামলার অনুলিপি ইত্যাদি সংগ্রহ করে সংস্থাটির কাছে জমা দিতে হয়।