পাঁচ আগস্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগ করেছে সম্মিলিত সনাতন পরিষদ।
সংগঠনটির নেতারা বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘকে (ইসকন) নিষিদ্ধ করার কথা বলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা চলছে। কিছু ব্যক্তি দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন।
একই সঙ্গে ইসকন সম্পর্কে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারেরও প্রতিবাদ জানিয়ে ঐক্যবদ্ধ সনাতনী সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ঘোষিত আট দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সব উপদেষ্টাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগরু-রুনি মিলনায়তনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন সংগঠনের একটি সম্মিলিত জোট সাংবাদিক সম্মেলনে এসব অভিযোগ ও দাবি জানায়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসকন সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
এসময় লিখিত বক্তব্যে সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ আচার্য্য বলেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ঢালাওভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আওয়ামী লীগের ট্যাগ লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে।
পাশাপাশি বিভিন্ন অজুহাতে সরকারি চাকরি থেকে সনাতনী সম্প্রদায়কে চাকরিচ্যুত, নতুন সরকারি নিয়োগে ও সংস্কার কমিটিতে সনাতনী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি না থাকা, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চাকরিরত সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকদের ও সনাতনী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে গণহারে ঢালাওভাবে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন প্রদীপ।
একই সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলন থেকে সনাতনী শিক্ষকসহ সব শিক্ষকের চাকরিচ্যুত ও লাঞ্ছনার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে চট্টগ্রামে হাজারিগলিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা প্রত্যাহার করে মুক্তির দাবিও করেন প্রদীপ।
এসময় রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হওয়ার পর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা বন্ধে সরকারের হস্তক্ষেপ আশা করে সম্মিলিত সনাতন পরিষদ। অন্যথায় পরিস্থিতি বিবেচনায় হিন্দুরা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে প্রস্তুত বলেও উল্লেখ করে সংগঠনের নেতারা।
প্রদীপ আচার্য্য আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদর রহমানকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তিনি কীভাবে ইসকনকে জঙ্গি সংগঠন বলেন? ইসকনকে নিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে ভিন্নভাবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন হিসেবে ইসকনকে সামনে আনা হচ্ছে। যা সত্য নয়।
তাছাড়া ২০০১-২০২৪ সাল পর্যন্ত সনাতনী সম্প্রদায়ের ওপর সংঘটিত সব অত্যাচার, নির্যাতন ও মঠ-মন্দির, জমি দখলের সুষ্ঠু বিচার এবং পাঁচ আগস্টের পর সংঘটিত সব অত্যাচার ও নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়।