সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এবার ৩৬ ঘণ্টার অবরোধ দিয়েছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি।
রোববার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে একাদশ দফার অবরোধ এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
গত ১০ দফায় বিএনপির অবরোধ-হরতাল কর্মসূচিতে মঙ্গলবার বিরতি রাখা হচ্ছিলো। এর বাইরে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও কর্মসূচি থাকে না। এবারই মঙ্গলবার কর্মসূচি দিলো দলটি।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবিতে হরতাল-অবরোধ অব্যঅহত রেখেছে বিএনপি-জামায়াত এবং তাদের সমমনা দলগুলো। তাদের দাবি, ‘একতরফা’ নির্বাচন বন্ধ করতে হবে। নির্বাচনী তৎপরতায় যুক্ত হওয়ায় কয়েকজন নেতাকে বহিষ্কারও করেছে দলটি।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হবার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
একই দাবিতে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিলো বিএনপি। ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে সেই নির্বাচনে জিতে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি গণফোরামের ড. কামাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে ভোটে অংশ নেয়। ভোটে ভরাডুবি ঘটে বিএনপির। এরপর কারচুপির অভিযোগ তোলে তারা। সংসদের মেয়াদের শেষ দিকে এসে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করেন।
এবারও ২০১৪ সালের মত একই দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। ফিরে এসেছে সংঘাতের পরিবেশ। যানবাহনে অগ্নিংযোগ আর নাশকতার ঘটনায় জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে। ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে রোজই অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
রোববার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকাসহ সারাদেশে মানববন্ধন করে বিএনপি।
অনলাইন ব্রিফিংয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সারাদেশে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচিতে পুলিশকে সাথে নিয়ে হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সরকার বিচলিত হয়ে মানববন্ধনের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতেও হামলা চালাতে পিছপা হচ্ছে না। তিনি অভিযোগ করেন, আগামী নির্বাচনে ভয়ভীতির পরিবেশ তৈরিতে গণগ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে। ১৯৯৬ ও ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগ বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে বিদেশি কূটনীতিকদের সাথে বৈঠক করলেও এখন বিএনপিকে নিয়ে উল্টো বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে।
রিজভী জানান, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন ও আলোচনা সভা করবে তার দল। এছাড়া ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে সাভার স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা ও দলের পক্ষ থেকে আলোচনা সভা করা হবে।