সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেন ও এক জলদস্যুর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের কথা জানিয়েছে সরকার।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম বুধবার বলেছেন, জিম্মি জাহাজের ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। পাশাপাশি জাহাজে থাকা জলদস্যুর এক সদস্যের সঙ্গেও প্রাথমিক যোগাযোগ হয়েছে।
তিনি বলেন, জলদস্যুরা জাহাজে থাকা ক্যাপ্টেনকে দেশে যোগাযোগ করার অনুমতি দিয়েছে। জলদস্যুরা নাবিকদের সাথে খারাপ আচরণ করেনি। জাহাজে খাবার যথেষ্ট রয়েছে বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তবে জাহাজের মালিক পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের সাথে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ হলেও, এখনো জলদস্যুদের সাথে কোনো যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
গত ১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা বোঝাই করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে উদ্দেশ্যে রওনা হয় চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী কবির গ্রুপের জাহাজটি। পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে।
মোগাদিসু থেকে এক হাজার ১১১ কিলোমিটার পূর্বে ভারত মহাসাগর থেকে ছিনতাই করে বাণিজ্যিক কার্গো জাহাজটিকে প্রথমে নেয়া হয় সোমালিয়ার গারাকাড এলাকায়। উপকূল থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার দুরে নোঙর ফেলা হয়।
এর পর আবার অবস্থান বদলে আবদুল্লাহকে নেয়া হয় গদবজিরান উপকূল এলাকায়। এবার নোঙর ফেলা হয় উপকূলের আরো কাছে, মাত্র সাড়ে ৭ কিলোমিটার দূরে। এরপর আর এগিয়ে উপকূলের পৌনে তিন কিলোমিটার দূরত্বে নেয়া হয়েছে।
জাহাজের ২৩ নাবিক ও ক্রুদের নিয়ে বারবার অবস্থান বদলাতে থাকায় সন্দেহ বাড়তে থাকে। এরি মধ্যে খবর আসে, জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও অপহৃত নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
বাণিজ্যিক জাহাজটি দস্যুদের কবলমুক্ত করতে সোমালি পুলিশ ও আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও এক প্রতিবেদন জানায় রয়টার্স।
তবে বাংলাদেশের অনুমতি ছাড়া কোনো দেশ চাইলে জাহাজে অভিযান চালাতে পারবে না বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাকসুদ আলম।
তিনি বলেন, ভারতসহ ইউএন অনুমোদিত বিভিন্ন দেশের যুদ্ধ জাহাজ নিরাপত্তার জন্য এই রুটে টহল দেয়। কিন্তু কোনো দেশের জাহাজকেই জলদস্যুর হাতে জিমি হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ উদ্ধারের অনুমতি দেয়া হয়নি। কিংবা কোন দেশও উদ্ধারের জন্য বাংলাদেশের কাছে অনুমতি চায়নি।
‘যেহেতু জাহাজটিতে ২৩ জন নাবিকই বাংলাদেশি, কাজেই অন্য কোনো দেশের অভিযান চালাতে হলে বাংলাদেশের অনুমতি নিতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।