ছয় ক্যামেরাম্যানের হঠাৎ করেই চাকুরীচূত্যি, সম্প্রচার নয়, ঘোষনা দিয়েই হাজার কোটি টাকা লোপাটের ধান্দায় আরিফ
নিজস্ব প্রতিবেদক: কোনো কিছু না জানিয়ে হঠাৎ করেই ছয় চিত্রগ্রাহকের চাকুরী খেলেন দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসান এবং নতুন প্রধান বার্তা সম্পাদক বোরহানুল হক সম্রাট।
মঙ্গলবার হঠাৎ করেই নিউজ চ্যানেল করার প্রস্তুতিকালে ছয় ক্যামেরাম্যানের চাকরি খেলেন দেশ টিভির মালিক আরিফ হাসান। চাকুরীচুত্যূ ক্যামেরাপার্সনরা হলেন কামাল রাজা চৌধূরী, তরুন কুমার চক্রবর্তী, নিজাম উদ্দিন, মো: সাগর, দুলাল মিয়াসহ আরো একজন। এদের ছয়জনের মধ্যে পাচজন বার্তা বিভাগের এবং একজন অনুষ্ঠান বিভাগের।
চাকুরীচূত্র দেশ টিভির সাবেক চিত্রগ্রাহকরা জানান দেশ টেলিভিশনের মালিক আরিফ হাসান এবং নতুন প্রধান বার্ত সম্পাদক বোরহানুল হক সম্রাটের নির্দেশনায় দেশ টিভির সম্প্রচার বিভাগের প্রধান
আলমগীর জাহান পিয়াস চাকুরীচূত্যীর এই আদেশ বাস্তবায়ন করেন। চাকুরীচূত্যরা জানান গত বারো বছর ধরে এই চ্যানেলের বিপদে আপদে পাশে থেকে তারা তাদের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করেছেন। আজ যখন একটু সুদিনের ফেরার চেষ্টা করছে তারা, কতৃপক্ষ চ্যানেলকে নিউজ চ্যানেল করার চেস্টায় আছেন তখন তাদেরকে চাকুরীচূত্য করা রাস্তায় পড়ে যাওয়া সামিল বলে মন্তব্য করেন চাকুরীচূত্যরা।
চাকুরীচূত্য আরো একজন বলে দেশ টিভির সম্প্রোচার বিভাগের প্রধান আলমগীর জাহান পিয়াসের কাছে তারা চাকুরীচূত্যীর কারন জানতে চাইলে পিয়াস তাদের জানায়,
প্রধান বার্তাসম্পাদক বোরহানুল হক সম্রাট তার নিজের লোককে চাকুরী দেবে বলে আগে জায়গা খালি করছেন। পরে ধীরে ধীরে সম্রাট তার পছন্দের লোকদের নিয়োগ দেবেন। আর এসবের মূল কলকাঠি নাড়াচ্ছেন মালিক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসান।
চাকুরীচুত্যরা দু:খ প্রকাশ করে বলেন কারো চাকুরী খেয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান কখনো বড় হতে পারেনা। এমন নজির কোথাও নিয়ে। যেখানে একটি নিউজ চ্যানেল করতে প্রায় ৫০জনের চেয়ে বেশী ক্যামেরা পার্সনের প্রয়োজন হয় অনুষ্ঠান বিভাগ এবং বার্তা বিভাগ মিলে, সেখানে আমাপদের চাকুরী খেয়ে কি স্বার্থ হাসিল করতে চায় দেশ টিভি কতৃপক্ষ তা তারা জানে। তাদের হঠাৎ এই চাকুরীচুত্যি পারিবারিক জীবনেও বড় ধাক্কাখাবে বলে মন্তব্য করেন তারা।
তবে দেশ টিভির মালিক আরিফ হাসানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ নতুন নয়। এরই মধ্যে আরিফ হাসান সকল গনমাধ্যম কর্মীরকাছে সবচেয়ে ঘৃনীত ব্যাক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। কারণ বেতন ছাড়া তার টেলিভিশনের স্টাফদের ছাটাই করা ছাড়াও এ্যাটকো নামের টেলিভিশন মালিকদের সংগঠনের মিটিংয়ে উপস্থিত হয়ে কি করে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে দূব্যবহার করতে হয় এবং বেতন ছাড়া চাকুরিতে রাখতে হয় দিনের পর দিন অন্যসব টেলিভিশন মালিকদের কাছে সেইসব অপ্রাতিষ্ঠানিক কথা বলে প্রায় সকল গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে সবচেয়ে ঘৃনীত ব্যাক্তি হিসেবে এরই মধ্যে কুখ্যাতী লাভ করেছে আরিফ হাসান।
তবে এরই মধ্যে আরিফ হাসানকে বেসরকারী টেলিভিশন মালিকদের সংস্থা এ্যাটকো থেকে বাদ করে দেয়া হয়েছে। কানাডা থেকে ফেরার পর সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে আরিফ হাসানকে এ্যাটকোর নির্বাহী কমিটি থেকে সরে যেতে আদেশ দেয়া হযেছে।
যদি সেই আদেশ আরিফ বাস্তবায়ন করা করতো তাহলে আরিফের বিরুদ্ধে থাকা দূর্ণীতির অভিযোগ, বিএনপির সাথে লবিংসহ নানা বিষয় সরকার আমলে নিতো বলেই আরিফ এ্যাটকোর নির্বাহী কমিটির সদস্য পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন।
অথচ কদিন আগেই এ্যাটকোর আগের নেতা আওয়ামীলীগের দালাল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত একাত্তর টিভির এমডি মোজাম্মেল হক বাবুকে সরিয়ে আরেক বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের সহকারীর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত বৈশাখী টেলিভিশনের ডিএমডি টিপু আলমকে বসুন্ধরার আনভির এবং দেশ টেলিভিশনের আরিফ এ্যাটকোর নির্বাচনে কৌশলে ১৯টি ভোট পাইয়ে দিয়ে এ্যাটকো থেকে মোজাম্মেল বাবুকে সরিয়ে দেয় এই আরিফ হাসান। তারাই নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয় এ্যাটকোর।
এখন এ্যাটকোর সবকিছুতেই চলে বিএনপির মালিকদের খবরদারী। সেটি বিষয় হঠাৎ করে আরিফ হাসান ঘোষনা দেয় দেশ টেলিভিশনকে নিউজ চ্যানেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার। আরিফ হাসানের চটজলদি চাতুরতা ভালোভাবে নেয়নি সরকার। তাছাড়া আরিফ হাসান তার মামা বিএনপি নেতা মুশফিকুর রহমান যখর কুমিল্লার সংসদ সদস্য ছিলেন তখন এই আরিফ হাসান মুশফিকুর রহমানের ব্যাক্তিগত সহকারী থেকে আজ টিভি চ্যানেলকে ব্যবহার করে হঠাৎ করেই হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। আর দেশ টিভিকে নিউজ চ্যানেল করার ঘোষনা দিয়ে কারো কারো কাছ থেকে শতশত কোটি টাকা লোপাটের পায়তারা করছেন বলেও জানান অনেকেই।
দুদক সূত্র জানায়,২০১১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৬ বার পাসপোর্ট পরিবর্তন করা আরিফ হাসানের জাল-জালিয়াতির আরও অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।