যুক্তরাষ্ট্রের বহুল প্রতীক্ষিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে মঙ্গলবার। ইউরোপ ও এশিয়ার কয়েকটি দেশে যুদ্ধের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটির নির্বাচনের দিকে নজর সারাবিশ্বের।
ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাগ্য নির্ধারণে আজ ভোট দেবেন দেশটির ভোটাররা। এ নির্বাচনে কমলা বিজয়ী হলে তিনি হবেন দেশটির ২৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প জয়ী হলেও সৃষ্টি হবে নতুন ইতিহাস, ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি।
এই মুহূর্তে শেষ বেলার প্রচারণায় ব্যস্ত আছেন দুই প্রার্থী। সোমবার ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প নর্থ ক্যারোলাইনায় এক প্রচারণা সভায় বলেন, আমি এমনকি ঠিকমতো ঘুমাতেও পারছি না। গত ৬২ দিনের একটি দিনও ছুটি নেই নি। যদি এই নির্বাচনে আমরা হেরে যাই, তাহলে সেটির দায় হবে একান্তই আমাদের।
অন্যদিকে একই দিন পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের অ্যালেনটাউনে প্রচারণা সভায় হ্যারিস বলেন, ডেমোক্রেটিক পার্টির পক্ষে জনগণের সাড়া দেখে আমার খুবই ভালো লাগছে।
উভয় প্রার্থীরই দাবি, ভোটার এবং জনমত তাদের পক্ষে রয়েছেন। তারা দু’জনই বলছেন, বিজয়ী হবে।
ভোটারদের উদ্দেশে কমলা হ্যারিস বলেছেন, নির্বাচিত হলে প্রথম দিন থেকেই তিনি জীবনযাত্রার খরচ কমানোর দিকে মনোযোগ দেবেন। তার প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে খাদ্যসামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণ, প্রথমবারের মতো বাড়ি কেনার সুবিধা, আবাসনের ব্যবস্থা ও ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি।
অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং যুক্তরাষ্ট্রে জীবনযাত্রাকে সাশ্রয়ী করার অঙ্গীকার করেছেন। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী তেল উৎপাদন বাড়িয়ে জ্বালানির দাম কমানো হবে। যদিও সুদের হার কমানো এককভাবে প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রণে নয়, তবুও তিনি এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
নির্বাচনবিষয়ক পণ্ডিতদের ধারণা, কয়েক দশকের মধ্যে এবার সবচেয়ে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হচ্ছে দেশটিতে। প্রধান দুই প্রার্থীই সমানে সমান। কমলা জাতীয়ভাবে ১ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ট নয়।
এবারের নির্বাচনে ইস্যু গর্ভপাত, অর্থনীতি, গণতন্ত্র ও অভিবাসন। দেশটিতে বেশির ভাগ রাজ্যে ঐতিহ্যগতভাবে হয় ডেমোক্র্যাট অথবা রিপাবলিকানরা জয়ী হয়ে থাকেন। তবে বেশ কয়েকটি রাজ্য রয়েছে, যেখানে যে কোনো দলই জয়ী হতে পারে। এগুলোকে দোদুল্যমান রাজ্য বলা হয়। এবার এ ধরনের রাজ্য সাতটি।
নির্বাচনে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী যেকোনো মার্কিন নাগরিক নির্বাচনে ভোট দিতে পারছেন। এক্ষেত্রে নর্থ ডাকোটা বাদে যুক্তরাষ্ট্রের বাকি ৪৯টি অঙ্গরাজ্যের সবগুলোতে আগেই ভোটার নিবন্ধন করা হয়েছে। ভোটের আগেই নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং নিবন্ধনের জন্য প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিলো।