পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হওয়ার মধ্যেই সারাবিশ্ব থেকে করোনাভাইরাসের টিকা প্রত্যাহার করে নেওয়া শুরু করেছে দিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
মঙ্গলবার ব্রিটিশ-সুইডিশ বহুজাতিক এ কোম্পানিটি এ ঘোষণা দিয়েছে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০২০ সালে করোনাভাইরাস সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে অক্সফোর্ডের সঙ্গে গবেষণা করে ‘কোভিশিল্ড ও ভ্যাক্সজেভরিয়া’ নামে কোভিড-১৯ প্রতিষেধক দুটি টিকা বানায় অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
মহামারির মধ্যে দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশেও এ টিকা দেওয়া হয়। কিন্তু ‘কোভিশিল্ড ও ভ্যাক্সজেভরিয়া’র বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়, দেখা দেয় বিতর্ক।
আর এই বিতর্কের মধ্যেই ভ্যাক্সজেভরিয়া টিকা অ্যাস্ট্রাজেনেকা বাজার থেকে তুলে নেওয়া শুরু করেছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সির কাছে ভ্যাক্সজেভরিয়া টিকা তুলে নেওয়ার জন্যে গত পাঁচ মার্চ আবেদন জানিয়েছিল অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এরপর মঙ্গলবার থেকে টিকা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বিশ্বের অন্যতম বড় টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ার কারণেই করোনার টিকা প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
এর কারণ হিসেবে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে যে, বাজারে কোভিড-১৯ এর অনেকগুলো টিকা এসে গেছে। এর ফলে ভ্যাক্সজেভরিয়ার চাহিদা কমে উদ্বৃত্ত থাকছে। ফলে আর তৈরি বা সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এছাড়া ভাইরাসের অনেকগুলো উপধরন তৈরি হয়ে কোভিড-১৯ এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে, যা আর প্রাণঘাতী নয়। এসব কারণের জন্যই অ্যাস্ট্রাজেনেকা বাজার থেকে তাদের টিকা প্রত্যাহার করে নেওয়া শুরু করেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাণিজ্যিক কারণেই কোভিড-১৮ ভ্যাকসিন প্রত্যাহার করা হচ্ছে এবং এর সঙ্গে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনো সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেছে অ্যাস্ট্রজেনেকা।
যুক্তরাজ্যের দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা গোটা বিশ্ব বাজার থেকেই ভ্যাক্সজেভরিয়া তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। অবশ্য অন্যান্য দেশ ইতিমধ্যে এই টিকা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ২০২৩ সালের মার্চ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় বন্ধ করা হয়।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর টিকাটি ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের টিকাদান কর্মসূচিতে ব্যবহারের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর প্রথম টিকা দেওয়া হয় ২০২১ সালের চার জানুয়ারি।
এক হিসাবে, শুধু মাত্র ব্যবহারের প্রথম বছরেই ৬৫ লাখের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এই টিকা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ করা হয়েছে ৩০০ কোটিরও বেশি ডোজ।