সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

কাউন্সিলর প্রার্থীদের ৩৮ জনই আসামি

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে ৩০টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হতে চেয়েছেন ১২৪ জন। গত বৃহস্পতিবার যাচাই-বাছাই শেষে ১১৭ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস। তবে তাদের মধ্যে ৩৮ জনের নামে রয়েছে এক থেকে সর্বোচ্চ ২১টি পর্যন্ত মামলা। এর মধ্যে কেউ হত্যা, কেউ অস্ত্র, বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং চোরাচালান মামলার আসামি।

আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে জমা দেওয়া হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ২০টি মামলা চলমান রয়েছে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী মো. কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে বিচারাধীন ১২টি, তদন্ত চলছে ছয়টির। ইতোমধ্যে দুই মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলোর বেশিরভাগই বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনে।

এতগুলো মামলা থাকার পরও কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে কামরুজ্জামান নামে দুই জন রয়েছেন। আমি কামরুজ্জামান কামরু। আমার নামে কোনও মামলা নেই। যার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তিনি হলেন কামরুজ্জামান সোহেল, রাজপাড়া থানা জামায়াতের আমির। বর্তমানে জেলখানায় রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।’

এদিকে, ১০টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন ৪৬ জন। তবে তাদের নামে কোনও মামলা নেই। দুই জনের নামে আগে মামলা থাকলেও পরে খালাস পেয়েছেন। নারীরা এখন মামলামুক্ত থাকলেও সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের ৪৪ শতাংশই বিভিন্ন ফৌজদারি মামলার আসামি।

হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, কাউন্সিলর পদে এই ৩৮ জন ছাড়াও অন্য ১৮ জন আগে মামলার আসামি ছিলেন। ইতোমধ্যে কেউ মামলা থেকে অব্যাহতি কেউ খালাস পেয়েছেন। কেউ কেউ বাদীর সঙ্গে আপস করে মামলা নিষ্পত্তি করেছেন।

১৪ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী আফজাল হোসেনের নামে মামলা আছে ১৪টি। এর আগে তিনটি মামলায় খালাস পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মামলাগুলোও বিস্ফোরকদ্রব্য ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে। ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী জামায়াত নেতা আবদুস সামাদের নামে মামলার সংখ্যা ছয়টি। এর মধ্যে দুইটি বিচারাধীন, চারটির তদন্ত চলছে। ইতোমধ্যে চার মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।

৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা চলমান। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর মতিউর রহমানের নামে একটি মামলা আছে। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর আশরাফুল হাসান বাচ্চুর নামে দুটি মামলা বিচারাধীন। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী রবিউল ইসলামের নামে চার মামলা বিচারাধীন। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী আলিফ আল মাহমুদের নামে তিনটি মামলা বিচারাধীন। আগে ছয়টি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন।

১৫টি মামলা থেকে খালাস পেলেও এখনও একটি মামলা চলমান ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী রেজাউন নবী আল মামুনের বিরুদ্ধে। ১০ নম্বরের প্রার্থী রাজ্জাক আহমেদ রাজনের নামে মামলার সংখ্যা দুইটি। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী জহিরুল ইসলাম রুবেলের নামে মামলা আছে তিনটি। এর মধ্যে একটি অস্ত্র মামলা। একটি হত্যা মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন ২০১৮ সালে।

১৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী আশরাফ হোসেন বাবু তিন মামলার আসামি। এর মধ্যে দুইটি বিচারাধীন। একটি মামলার কার্যক্রম স্থগিত। একই ওয়ার্ডের প্রার্থী নুরুজ্জামান টিটোর নামে আছে হত্যাসহ দুইটি মামলা। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর মাহাতাব হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে দুইটি মামলা চলছে।

১৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর বেলাল আহমেদের নামে বিচারাধীন মামলা আছে দুটি। ৩০ নম্বরের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলা একটি। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান একটি মামলার আসামি।

২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী নোমানুল ইসলামের নামে মামলা আছে দুইটি। ২৬ নম্বরের ওয়ার্ডের মহিউদ্দিন বাবুর নামে বিচারাধীন মামলা চারটি। তিনটিতে খালাস পেলেও এখনও দুটি মামলা চলছে ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মাসুদ রানার বিরুদ্ধে। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে আদালতে আট মামলার বিচার চলছে। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমানের নামে মামলা আছে তিনটি। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হামিদুল ইসলামের নামে বিচারাধীন মামলা দুটি। ২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মোখলেসুর রহমানের নামে মামলা আছে সাতটি।

২৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন বিচারাধীন ৯ মামলার আসামি। একই ওয়ার্ডের প্রার্থী আনারুল ইসলাম ও একলাস হোসেন লাকি একটি করে মামলার আসামি। ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর আনোয়ারুল আমিন তিন মামলার আসামি। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী আবুবক্কর কিনুর নামে জমিজমা সংক্রান্ত একটি মামলা আছে। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মো. টুটুলের নামে মামলা আছে তিনটি। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর তরিকুল আলমের নামে তিনটি মামলা বিচারাধীন।

এ ছাড়া ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন ও মুরাদ আলী একটি করে মামলার আসামি। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী আখতার আহম্মেদ বাচ্চু, ২৯ নম্বরের আবু জাফর বাবু, ৬ নম্বরের মো. বদিউজ্জামান, ২৬ নম্বরের মোখলেসুর রহমান খলিল, ২৭ নম্বরের মো. মনিরুজ্জামান, ৮ নম্বরের জানে আলম খান জনি, ২৪ নম্বরের জাহাঙ্গীর আলম ও ১০ নম্বরের আমিনুল ইসলামের নামে একটি করে মামলা আছে।

এসব বিষয়ে  সুশাসনের জন্য নাগরিক রাজশাহী জেলার সভাপতি আহমেদ সফিউদ্দিন বলেন, ‘সৎ ও যোগ্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা জনগণের দায়িত্ব। তারা প্রার্থীর ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ভোট দেবেন, এটাই হওয়া উচিত। তাহলে একজন যোগ্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। কোনও দাগি আসামি, সন্ত্রাসী কিংবা মাস্তান যেন জনপ্রতিনিধি না হতে পারেন, সে বিষয়ে ভোটারদেরই খেয়াল রাখতে হবে। ভোটের সময় দুষ্টু লোকের মিষ্টি কথায় ভুলে গেলে চলবে না।’

Facebook
X
WhatsApp
Email
Telegram
সর্বশেষ
ফেসবুক নেটওয়ার্ক ও পার্টনার পেজ
মিডিয়া
Cover for Table Talk Uk
595,824
Table Talk Uk

Table Talk Uk

Table Talk UK Discusses the political and social issues of the country. Our only purpose is to expose social inconsistencies and politics in the face of accountability on the path to democracy and talk about the rights of people.

This message is only visible to admins.
Problem displaying Facebook posts. Backup cache in use.
PPCA Error: Due to Facebook API changes it is no longer possible to display a feed from a Facebook Page you are not an admin of. The Facebook feed below is not using a valid Access Token for this Facebook page and so has stopped updating.

Smash Balloon Custom Facebook Feed WordPress Plugin The Custom Facebook Feed plugin

সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
কপিরাইট © 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত — লন্ডন মিরর।
সম্পাদক: হাসিনা আক্তার
সার্চ করুন
লগইন/সাইন আপ
সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!