দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন আজ। রাজধানীর কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটারের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে রোববার সকাল ৬টা থেকে সাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এ পথে মাত্র দশ মিনিটে এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যাওয়া-আসা করা যাবে।
শনিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সড়কের বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশ উদ্বোধন করবেন। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ফলক উন্মোচনের পর কাওলার র্যাম্পে টোল দিয়ে সরকারপ্রধানের গাড়িবহর ফার্মগেট আসবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী পুরোনো বাণিজ্যমেলার মাঠে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেবেন।
শুক্রবার সুধী সমাবেশস্থল পরিদর্শন শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, উড়াল মহাসড়কের একাংশ চালুতে রাজধানীর যানজট কিছুটা হলেও কমে আসবে।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রী বলেছেন, পুরো কাজটুকু হয়ে গেলে মানুষ সুফল পাবে। এটা যথেষ্ট সুফল দেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
কাদের বলেন, মাটির কারণে ব্যয়ের পরিমাণ আমরা না চাইলেও বেড়ে গেছে। যখন এর নির্মাণ কাজ হয়ে যাবে, তখন আশা করি এ নিয়ে আর কোন দুশ্চিন্তা থাকবে না।
তিনি বলেন, মতিঝিল পর্যন্ত যখন কাভার হবে তখন এটি যানজট নিরসনে ভালো ভূমিকা পালন করবে। যা জনগণকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে।
উড়ালসড়কের যেসব স্থান দিয়ে ওঠানামা করা যাবে, তা গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে সেতু বিভাগ। তালিকা অনুসারে, উত্তর দিক থেকে কাওলা, প্রগতি সরণি ও বিমানবন্দর সড়কে আর্মি গলফ ক্লাবের সামনে -এই তিন জায়গা দিয়ে উড়ালসড়কে ওঠা যাবে। নামার স্থানগুলো হচ্ছে বনানী কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ, মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে, ফার্মগেটে ইন্দিরা রোডের পাশে।
দক্ষিণ দিক থেকে ওঠা যাবে বিজয় সরণি উড়ালসড়কের উত্তর ও দক্ষিণ লেন দিয়ে এবং বনানী রেলস্টেশনের সামনে থেকে। দক্ষিণ দিক থেকে উঠে নামা যাবে মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে, বনানী কামাল আতাতুর্ক সড়কের সামনে বিমানবন্দর সড়কে, কুড়িল বিশ্বরোড ও বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনালের সামনে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: উত্তরার যানজট কমলেও ফার্মগেটে বৃদ্ধির শঙ্কাএলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: উত্তরার যানজট কমলেও ফার্মগেটে বৃদ্ধির শঙ্কা
সেতু বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উড়ালসড়কে যানবাহন থেকে নেমে ছবি তোলা নিষেধ। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ২ এবং ৩ চাকার যানবাহন এবং পথচারী চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উপর যে কোন ধরনের যানবাহন দাঁড়াতে পারবে না। এক্সপ্রেসওয়ের মূল সড়কে সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার এবং উঠানামার র্যাম্পের জন্য সর্বোচ্চ গতিসীমা ৪০ কিলোমিটার রাখতে হবে।
এয়ারপোর্ট থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটারের দৈর্ঘ্যের এই উড়াল পথ। ওঠা ও নামার জন্য আরও প্রায় ২৮ কিলোমিটারের র্যাম্প। সব মিলিয়ে প্রায় ৪৭ কিলোমিটার পথ। যার মধ্যে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশে থাকছে সাড়ে ১১ কিলোমিটার পথ। যা উন্মুক্ত হচ্ছে আজ।
২০১১ সালে কাজ শুরু হওয়া দেশের প্রথম এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ব্যয় ধরা হয়েছিলো ৮ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। মাঝের এই বছরগুলোতে কয়েক দফা বেড়ে, এখন হয়েছে ১৩ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা।