শুরুটা ভালো না হলেও শেষ পর্যন্ত তাওহীদ হৃদয়ের সেঞ্চুরির ওপর ভর করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতকে ২২৯ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ৮.৩ ওভারে মাত্র ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ঠিক সেই সময় দলের হাল ধরেন তাওহীদ হৃদয় ও জাকের আলী।
ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই সৌম্য সরকারকে হারায় টিম বাংলাদেশ। ৫ বল খেলে রানের খাতা না খুলেই মোহাম্মদ শামির ওভারে উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুলের গ্লাভসে ধরা পড়েন সৌম্য । তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে দলকে হতাশ করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও। সৌম্যের পথ ধরেই ডাক মেরে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
২ রানে ২ উইকেট হারানোর পর মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করছিলেন তানজিদ তামিম। তবে চারে নেমে ব্যর্থ হন মিরাজও। শামির ওভারে স্লিপে শুবমান গিলের হাতে ধরা পড়েন মিরাজ। সাজঘরে ফেরার আগে ১০ বলে ৫ রান করেছেন তিনি।
এদিকে অষ্টম ওভারে অক্ষর প্যাটেলের বল খেলতে গিয়ে বিপাকে পড়েন তামিম। অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে সামান্য টার্ন করে বের হয়ে যাওয়ার সময় ড্রাইভ করতে যান তিনি। কিন্তু ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে যায় রাহুলের হাতে। ২৫ বলে ২৫ রান করেছেন এই ওপেনার।
এরপর ক্রিজে আসেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু প্রথম বলেই ডিফেন্স করতে গিয়ে রাহুলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি, গোল্ডেন ডাক মেরে ফেরেন সাজঘরে।
এরপর হৃদয়-জাকের জুটি দলের হাল ধরেন। এই জুটিতে আসে ১৫৪ রান। দলীয় ১৯৮ রানের মাথায় শামির বলে বিরাট কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৬৮ রানে ফিরে যান জাকের আলী।
এরপর ১৮ রান করে দলীয় ২১৪ রানের মাথায় প্যাভিলিয়নে ফিরে যান রিশাদ হোসেন। হর্ষিত রানারি বলে হার্দিক পান্ডিয়া হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। অন্যদিকে শামির বলে বোল্ড হয়ে শূন্য হাতে ফিরে যান তানজিম হাসান।
শেষ পর্যন্ত তাসকিনকে সঙ্গে নিয়ে দলের রান বাড়ান তাওহীদ হৃদয়। ইনিংসের ৪৯ তম ওভারের প্রথম বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। ১১৪ বলে সেঞ্চুরি করার পথে ছয়টি ৪ ও দুটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে ৩ বলে কোনো রান তুলতে পারেননি তাসকিন। শ্রেয়াস আইয়ারের হাতে ক্যাচ দিয়ে শামির পঞ্চম শিকার হন তিনি।
ইনিংসের শেষ ওভারে স্ট্রাইক প্রান্তে আসেন হৃদয়। প্রথম তিন বল ডট দিলেও চতুর্থ বলে শামির হাতে ক্যাচ তুলে দেন হৃদয়। শেষ পর্যন্ত ১১৮ বলে ১০০ রানে মাঠ ছাড়তে হয় তাওহীদ হৃদয়কে। আর ৪৯.৪ ওভারে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ২২৮ রানে।
২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথম কোনো আইসিসি টুর্নামেন্টে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিলো বাংলাদেশ। ৫ উইকেটের জয়ে সেবার যাত্রা শুরু করেছিলো তারা। তবে শেষ ১৮ বছরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে আরও ১০ ম্যাচ খেলেও ভারতকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ একাদশ: তানজিদ হাসান, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তাওহীদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), জাকের আলী, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান।
ভারতের একাদশ: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শুবমান গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুল (উইকেটকিপার), হার্দিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, হর্ষিত রানা ও মোহাম্মদ সামি।