অবশেষে ভেঙে গেল গণঅধিকার পরিষদ। এখন থেকে একটি অংশের নেতৃত্বে থাকছেন ড. রেজা কিবরিয়া ও আরেক অংশের নেতৃত্বে নুরুল হক নুর।
সোমবার একাংশের ডাকে রাজধানী পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কাউন্সিল হয়। এতে সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান নির্বাচিত হন। তবে ড. রেজা কিবরিয়া নেতৃত্বাধীন পক্ষ এ কাউন্সিলকে অবৈধ বলে দাবি করেছেন।
নুরুল হকের সমর্থকদের কাউন্সিলের বিপরীতে বেলা ১১টায় ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন রেজা কিবরিয়ার অনুসারীরা। কাউন্সিল শুরুর আগে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় সেই কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে গণ অধিকার পরিষদের প্রথম কাউন্সিল সোমবার দুপুর ১টায় শুরু হয়, যা চলে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। নুরুল হকের সমর্থকদের ঘোষিত এই কাউন্সিলে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন রেজা কিবরিয়ার অনুসারীরা। তবে রেজা কিবরিয়ার ঘোষিত সদস্যসচিব হাসান আল মামুন শেষ সময়ে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হন।
নুর সমর্থিত গণঅধিকার পরিষদের নবনির্বাচিত উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। হাসান আল মামুনের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ইতিবাচক ছিল। বাকি যারা কাউন্সিলের বিরোধিতা করেছেন, তারাও দলে ফিরবেন বলে আমরা আশাবাদী। তাদের জন্য দরজা খোলা আছে, গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হবে।
ভোট গণনা শেষে রাত সাড়ে দশটার দিকে তা ঘোষণা করা হয়। এতে সভাপতি পদে নুরুল হক নুর ১৩৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নাজমুল উস সাকিব পান ১৩ ভোট। এ পদে মোট তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোট ভোটার ছিল ২১৬ জন, এরমধ্যে এ পদে ভোট পড়েছে ১৫৪টি।
সাধারণ সম্পাদক পদে মো. রাশেদ খান ১০৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হাসান আল মামুন পান ৪৩ ভোট। এ পদেও চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ পদে ভোট পড়েছে ১৬৩টি।
এছাড়াও উচ্চতর পরিষদের আটজন নির্বাচিতরা হলেন- আবু হানিফ , শাকিল উজ্জামান, হানিফ খান সজীব, শহিদুল ইসলাম ফাহিম , ফাতেমা তাসনীম, আব্দুজ জাহের, সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী ও জসিম উদ্দিন আকাশ ।
ড. রেজা কিবরিয়া নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, কিছু দলছুট নেতা দলীয় গঠনতন্ত্র লংঘন করে একটি ব্যাক্তিগত কাউন্সিল করেছে। এর সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা শুরু থেকেই নীতির প্রশ্নে আপসহীন। সুতরাং গণঅধিকার পরিষদ চলবে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী। যে বা যারা দলীয় গঠনতন্ত্র লংঘন করে এ ধরনের কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছে, আমরা তদন্ত সাপেক্ষ তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো।
ফারুক হাসান আরও বলেন, দলের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া এই মুহূর্তে বিদেশে রয়েছেন। আমেরিকার একটি হাসপাতালে তিনি ভর্তি রয়েছেন। আগামী সপ্তাহে দেশে আসবেন। এরপরই আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ডাকা হবে। সেখানে থেকেই কাউন্সিলের ঘোষণা আসতে পারে।